১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি

জমিজমা নিয়ে বিরোধে কুপিয়ে একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন!

হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী , প্রকাশিত হয়েছে-

 

বরগুনার আমতলীতে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে লিটন খান (৩৫) নামে একজনের কব্জি বিচ্ছিন্ন করেছে প্রতিপক্ষরা। ঘটনা ঘটেছে রবিবার ভোররাতে। গুরতর আহত লিটন খানকে উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারী ওয়াজেদ আলী মোল্লাকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের তারিকাটা গ্রামের দুলাল খানের ছেলে লিটন খানের (৩৫) সাথে ওই একই গ্রামের তোজক আলী মোল্লার ছেলে ওয়াজেদ আলী মোল্লার সাথে ১ একর জমি নিয়ে গত ৪-৫ বছর ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

ওই বিষয়টা নিয়ে একাধিক বার সালিস বৈঠকও হয়েছে। তারপরও মিমাংসা হয়নি। রবিবার রাতে লিটন খান নিজ গ্রামের মসজিদে লাইলাতুল কদরের নামজ পরতে যান। নামাজ পড়া শেষে রাত সাড়ে ৩ টার দিকে বাড়িতে ফেরার পথে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা ওয়াজেদ আলী মোল্লাসহ ৪ থেকে ৫ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা করেন। হামলার সময় ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে লিটন খানের ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন।

ওই সময় তাদের এলোপাথারি রামদার কোপে বাম হাত, ডান কান ও পিঠে রক্তাত্ব জখম হয়। রামদার কোপে ডান কানও অর্ধেক পরিমান বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বলে জানান স্বজনরা। হামলার সময় লিটন খানের ডাক চিৎকার শুনে স্বজনরা এগিয়ে আসলে ওয়াজেদ আলী মোল্লাসহ হামলাকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় চেষ্টা করে ওই সময় স্থানীয় মানুষের সহযোগিতায় হামলার মুল হোতা ওয়াজেদ আলী মোল্লাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অন্যরা পালিয়ে যায়।

হামলায় আহত লিটন খান বলেন, রবিবার রাত সাড়ে ৩ টার সময় আমি মসজিদে লাইলাতুল কদরের নামাজ আদায় শেষ করে বাড়ি ফিরছিলাম। ওই সময় ওয়াজেদ আলী মোল্লার নেতৃত্বে ৪-৫ জন সন্ত্রাসী বাহিনী আমার পথ আগলে কোপাতে থাকে। কোপানোর এক পর্যায়ে তারা আমার ডান হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং ডান কান কেঁটে ফেলে।

এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তিনি আরো বলেন, ওয়াজেদ মোল্লার সাথে আমার ১ একর জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে আমার উপর সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। আমি ওই ঘটনার বিচার চাই।

আহত লিটন খানের চাচা মোশারেফ হোসেন খান বলেন, আমার ভাতিজাকে জমি জমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ওয়াজেদ মোল্লা ৪-৫ জন সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হামলা করে কুপিয়ে হাতের কব্জি বিচ্ছিন্নসহ এলোপাথারি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় হামলাকারীকে আটক করে আমরা পুলিশে সোপর্দ করেছি।

আহত লিটন খানের স্ত্রী লাইজু বেগম বলেন, ওয়াজেদ আলী মোল্লা আমার স্বামীকে কুপিয়ে পঙ্গু করে দিয়েছে। আমি ওই ঘটনার বিচার চাই।

আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মেহেরিন আশ্রাফ বলেন, লিটন খানের ডান হাতের কব্জি প্রায় বিচ্ছিন্ন। এছাড়া বাম হাত পিঠ কানসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, লিটন খানের উপর হামলাকারী ওয়াজেদ আলী মোল্লাকে আটক করা হয়েছে। ওই বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।