৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ২৪শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ২৭শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

২শ পুলিশের পাহারায় ৭শতাধিক মানুষের বিক্ষোভ

বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি: , প্রকাশিত হয়েছে-

পটুয়াখালীর বাউফলে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তার অনুসারীরা।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশি পাহারায় পৌরশহরে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন ৭শতাধিক মোতালেব অনুসারী। মিছিলকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পৌরশহরে প্রায় ২শ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল। মিছিলটি পৌরশহরের কাগুজিরপুল এলাকা থেকে শুরু হয়ে হয়ে পাবলিক মাঠ সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানা সংলগ্ন ইলিশ চত্বরে গিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বক্তব্য রাখেন মোতালেব হাওলাদারের ভাগিনা মো. সাহবুদ্দিন, উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে ও বগা ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান, কৃষকলীগ নেতা রেজাউল করিম পল্টু ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

এদিকে একই দিনে বিএনপির জ্বালাও পোড়াও অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিল কর্মসূচির ডাক দেয় উপজেলা আওয়ামীলীগ। সংঘাত এড়াতে প্রশসান এ দিনের শান্তি সমাবেশ কর্মসূচি একদিন পিছিয়ে দেয়। আগামী কাল বুধবার উপজেলা ও সকল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ওই শান্তি সমাবেশ পালন করবে বলে জানায় যায়।

এর আগে গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আওয়ামীলীগের বিবদমান তিনপক্ষ পৃথক পৃথক র‌্যালীর ঘোষণা করেন। উপজেলা প্রশাসন তিনপক্ষকে ভিন্ন ভিন্ন সময় বেধে দেয়। বেলা ১১টার দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের র‌্যালী হাইস্কুল মাঠ থেকে শুরু করেন। র‌্যালীটি উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা চেয়ারম্যান অপর পক্ষের কর্মসূচি স্থল জনতা ভবনে যেতে চান। দুপক্ষের সংঘাত এড়াতে ইউএনও ও ওসিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপজেলা চেয়ারম্যানের র‌্যালী উপজেলা গেটের সামনে আটকে দেয়। এতে উত্তেজিত হয়ে ওঠে মোতালেব অনুসারীরা। লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিয়ে হামলা করে পুলিশের ওপর। হামলা ওসিসহ ৮পুলিশ সদস্য আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও পরে ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে। ছত্রভঙ্গ হয়ে মোতালেব অনুসারীরা। এর পরেও উপজেলা চেয়ারম্যান কিছু লোকজন নিয়ে প্রশাসনের বাঁধা ভেঙে জনতা ভবনে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পথে জনতা ভবন থেকে প্রায় ২০০ মিটার দুরে পুরানো বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এমপির পক্ষের অনুসারীদের সাথে সংর্ঘষ বাধে। এতে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন আহত হয়। কোপের আঘাতে উপজেলা চেয়ারম্যানের হাতপা জখম হয়। উপজেলা চেয়ারম্যানকে আহত অবস্থায় প্রথমে বাউফল হাসপাতালে পরে বরিশাল পাঠানো হয়। পরিস্থিতি শান্ত হলে ১১টার ৪০ মিনিটের সরকারি কলেজ মাঠ থেকে জেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ও পৌর মেয়র জিয়াউল হক জুয়েলের নেতৃত্বে একটি র‌্যালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে আসেন। পরিষদ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আবার কলেজ মাঠে গিয়ে শেষ হয়। বেলা ১২টার কিছু সময় পর উপজেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় জনতা ভবন থেকে আ.স.ম ফিরোজ এমপির নেতৃত্বে র‌্যালী বের হয়। র‌্যালীটি পাবলিক মাঠে গিয়ে সমাপ্ত হয়।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয়ে ৩০০জনকে আসামী করে পুলিশ বাদি হয়ে মামলা করেন। তবে এখন পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারের আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়নি।

বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন,‘ সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রাখতে র‌্যাব পুলিশসহ প্রায় ২শ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাঠে কাজ করছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।