বেনাপোল সীমান্তের মাদক সম্রাট বহু মামলার আসামি বাদশা আটক


রবিউল ইসলাম, বেনাপোল প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩, ২০২৪, ৮:০২ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
বেনাপোল সীমান্তের মাদক সম্রাট বহু মামলার আসামি বাদশা আটক

 

যশোরের শার্শা সীমান্তের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী এবং খুন, গুম, মানবপাচারসহ ১৫-এর অধিক মামলার আসামি বাদশা মল্লিককে (৫৭) আটক করেছেন ৪৯ বিজিবি সদস্যরা। বাদশা মল্লিক বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে।

বুধবার (২ অক্টোবর) বিকালে বাহাদুরপুর ইউনিয়নের কোদলার হাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিজিবি সদস্যরা তাকে আটক করেন। এ সময় তার কাছ থেকে ৫৬ হাজার ৫৬০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সাইফুল্লাহ্ সিদ্দিকী কুখ্যাত মাদক সম্রাট বাদশার আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে যশোর সীমান্ত এলাকায় অস্ত্র ব্যবসা, স্বর্ণ চোরাকারবারি, মাদক, হন্ডি ও ধুর পাচারসহ নানাবিধ কর্মকাণ্ডে জড়িত।

বৃহষ্পতিবার (৩ অক্টোবর) ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, বিভিন্ন অপরাধমূলক ১৫টির অধিক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি বাদশা মল্লিক। পূর্বে এতটি ওয়ান শুটারগান, ৫ রাউন্ড গুলি ও ২৫ বোতল ফেনসিডিলসহ বাদশাকে আটক করলেও অল্প কিছুদিনের মধ্যে সে আবার বেরিয়ে আসে। সীমান্ত এলাকার চোরাচালান কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মাফিয়া ডন খ্যাত বাদশার ভারতের বস গৌতম, রবিউল, আজগর, নাসির ও অপু সাহার সাথে রয়েছে নিবিড় যোগাযোগ। ভারতের সুধীর, সাক্ষাত ও কবির সিন্ডিকেটও কুখ্যাত বাদশার কাছে পাইকারি ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক সরবারহ করে থাকে।

একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বাদশা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বর্তমান দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শীর্ষ রাজনৈতিক, দেশদ্রোহী, অর্থ পাচারকারীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা সন্ত্রাসীদের টাকার বিনিময়ে ভারতে পলায়নের সুযোগ করে দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত। বিভিন্ন মামলার মধ্যে তার একটি মামলায় ৩২ বছর কারাদণ্ড হয়েছে। ওই মামলায় কিছুদিন কারাভোগ করে জামিনে বেরিয়ে এসে নতুন করে শুরু করে ডলার, স্বর্ণ, অস্ত্র, ফেনসিডিল, গাঁজা, হুন্ডি ও ধুর পাচারের ব্যবসা। তার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় যে সব মামলা রয়েছে বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নম্বর ২৬/০৮১, তারিখ ২৭/১১/২০২১, ধারা-১৯-৪/১৯(এফ) ১৮৭৮ সালের অস্ত্রআইনের মামলায় সে এজাহারে অভিযুক্ত। জিডি নম্বর-১১৮, তারিখ-০৩/১১/২০২০ইং । এই মামলায় সে সাধারন ডায়েরীতে অভিযুক্ত।

ডিএমপির শেরেবাংলা নগর থানার এফআইআর নং-৫০/৩৭১, তারিখ ২৯/০৮/২০১৯। ধারা-৩৬(১) সারণির ১০(গ)/৪১ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ মামলায় বাদশা অভিযুক্ত।

যশোরের শার্শা থানার মামলা নং-৩৬/২৫১, তারিখ ১৫/০৬/২০১৮ইং। ধারা ৩০২/৩৪, পেনাল কোড-১৮৬০ মামলায় অভিযুক্ত। যশোরের শার্শা থানার মামলা নং-৯/২২৫, তারিখ ১৪/০৬/২০১৭ইং। ধারা-১৯(১)এর ৩(খ) ১০৯০ সালের মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় অভিযুক্ত। যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নং-৪৮/৭১৩, তারিখ ২৫/১১/২০১৬ইং। ধারা-১৯(১)এর ৩(খ) ১০৯০ সালের মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় অভিযুক্ত। যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নং-৪৯/৭১৪, তারিখ ২৫/১১/২০১৬ইং। ধারা-১৯-এর (এ) ১৯৭৮ সালের আস্ত্র আইনের মামলায় অভিযুক্ত। যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নং-৩২, তারিখ-২৮/০৫/২০০৫, এসজিআর নং৩০/০৫, তারিখ ২৫/১১/২০১৬ইং। ধারা-২৫-এর (বি) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এজাহারে অভিযুক্ত। যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার মামলা নং-৪১/৫১৬, তারিখ-২৪/০৮/২০১৩, ধারা-২৫-(বি)এর ২(বি) ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় সে এজাহারে অভিযুক্ত।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন থানা ও আদালতে রয়েছে মাফিয়া ডন বাদশার নামে অসংখ্য মামলা। তাকে আটক করার পর সাধারণ জিঙ্গাসাবাদের ভিত্তিতে মাদক চোরাচালান ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইননুগ ব্যবস্থাগ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আটককৃত আসামিকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম পক্রিয়াধীন রয়েছে।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১