কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, যতক্ষণ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ থাকবে ততক্ষণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নেই। বাজেটে সংসদ সদস্যদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। স্বাধীনভাবে (কথা) বলার সুযোগ নেই।
মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় একটি বিল পাসের ওপর আলোচনাকালে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরাও একই কথা বলেন।
সংসদে ‘চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিলটিতে সংসদীয় কমিটির একটি নতুন ধারা অন্তর্ভূক্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী।সংসদীয় কমিটি কোনো বিলে নতুন ধারা যুক্ত করতে পারে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলে স্পিকারের রুলিং চান তিনি। এর জবাব দিতে উঠলে প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ বলেন, সংসদের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেন।
পরে সংশোধনী প্রস্তাবের সময় জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গ টানেন। তিনি বলেন, ‘সংসদের কি খুব একটা ক্ষমতা আছে? যিনি সংসদে সংখ্যাগরিষ্ট দলের নেতা তার হাতেই সব ক্ষমতা। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারো কিছু বলার ক্ষমতা আছে? বললে কি সদস্য পদ থাকবে?
তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ থাকবে ততক্ষণ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা নেই। বাজেটে সংসদ সদস্যদের কোনও অংশগ্রহণ নেই। স্বাধীনভাবে বলার সুযোগ নেই।’
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, ‘সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা কতটুকু আছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।’
জাপার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘৭০ অনুচ্ছেদ কেন এসেছে তা নিয়ে তিনি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর দেখা গেলো সংসদ সদস্যদের কেনাবেচা হতো। এই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশের সংবিধানে ৭০ অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হয়। কিন্তু এখনকার বাস্তবতা হলো দলের বিরুদ্ধে ভোট না.. কোনও কথাই বলা যাবে না। এর ফলে সংসদে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হচ্ছে না।’
প্রসঙ্গত, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনও সংসদ সদস্য দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দিতে পারেন না। এতে বলা আছে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়ে কোনও ব্যক্তি সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হলে সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোটদান করলে সংসদে তার আসন শূন্য হবে।