আমতলী- তালতলীর বাজারগুলোতে মৌসুমী ফল তরমুজে সয়লাব


হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১১, ২০২২, ১:৪০ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
আমতলী- তালতলীর বাজারগুলোতে মৌসুমী ফল তরমুজে সয়লাব

 

 

বরগুনার আমতলী উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে সুস্বাদু বিভিন্ন জাতের মৌসুমী ফল তরমুজে সয়লাব হয়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে তরমুজের মৌসুম শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপকূলীয় জনপদ দক্ষিণাঞ্চলঝুড়ে তরমুজের উৎপাদন বিগত বছরগুলোর তুলনায় প্রথমদিকে বেশ ভালো ফলন হলেও শেষের দিকে প্রাকৃতিকভাবে পরাগায়ন ও ব্যাকটেরিয়া জনিত কারনে ফুল ফলসহ কিছু তরমুজ গাছ মরে যাওয়ায় উৎপাদন কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট তরমুজ চাষীরা।

আমতলী- তালতলী উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে ছোট বড় আকারের তরমুজে সয়লাব হয়ে গেছে। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে বিক্রেতারা ভালো দাম পাচ্ছেন বলে জানান একাধিক তরমুজ বিক্রেতা।

জানা গেছে, আমতলী- তালতলী উপজেলাসহ উপকূলীয় জনপদ দক্ষিণাঞ্চলঝুড়ে এ বছর তরমুজের ব্যাপক চাষ হয়েছে। শুরুর দিকে ফলনও ভালো হয়েছিল এ মৌসুমী ফলের। একযুগ ধরে উপকূলের কোনো কোনো এলাকায় কৃষকের কাছে তরমুজ চাষ প্রধান অর্থকরী ফসল হয়ে উঠেছে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, অল্প সময়ে অধিক ফলন হওয়ায় মৌসুমি ফলের মধ্যে তরমুজের কোনো বিকল্প দেখছেন না চাষিরা।

সংশ্লিষ্টরা চাষিরা জানিয়েছেন, তরমুজ চাষে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। বীজ বপনের পর তরমুজের চারা পরিচর্যা করতে হয়। জৈব ও রাসায়নিক সার, ঔষধের মাত্রা বাড়তি হলেই ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

উপজেলার পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের তরমুজ চাষি মোঃ নিজাম উদ্দিন জানান, যারা আগাম তরমুজ চাষ করেছিলেন তাদের ফলন ভালো হওয়ায় তাদের তরমুজ ভালো দামে বিক্রি হয়েছে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউট্রিশন ও ফুড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক সুজন মালী বলেন, তরমুজে শতকরা ৬ ভাগ চিনি এবং ৯২ ভাগ জল এবং ২ ভাগ অন্যান্য উপাদান রয়েছে। এটি ভিটামিন এ জাতীয় ফল।

জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যলয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপকূলীয় বরগুনা জেলায় ১১ হাজার ৫১২ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আমতলী ও তালতলী উপজেলায় আবাদ হয়েছে মোট ৪ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে আমতলী উপজেলায় ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং তালতলী উপজেলায় ৭৭০ হেক্টর জমিতে। শুরুরদিকে বেশ ভালো ফলন হলেও শেষের দিকে প্রাকৃতিকভাবে পরাগায়ন ও ব্যাকটেরিয়া জনিত কারনে ফুল ফলসহ কিছু তরমুজ গাছ মরে যাওয়ায় উৎপাদন কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট তরমুজ চাষীরা।

সরেজমিনে আমতলী পৌর শহর ও তালতলীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বিক্রেতারা আড়ৎদারদের নিকট থেকে ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ১৪ হাজার টাকা, ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ২০ থেকে ২১ হাজার টাকা এবং ১০ থেকে ১৫ কেজি ওজনের ১০০ পিস তরমুজ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা খুচরা বিক্রেতার কাছ থেকে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ৮০ থেকে ১৫০ টাকা, ৬ থেকে ৭ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা এবং ৮ থেকে ১০ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় কিনছেন।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার বসু মুঠোফোনে বলেন, তরমুজ গ্রীষ্মকালীন সুস্বাদু এবং গ্রীষ্মকালে বেশ জনপ্রিয় একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমাণ পানি থাকে। পলি ও বেলে-দোঁআশ মাটিতে তরমুজ ভালো জন্মে।

আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম মুঠোফোনে বলেন, সবচেয়ে বেশি তরমুজ উৎপাদন হয় উপকূলীয় জনপদ দক্ষিণাঞ্চলে। সারাদেশের মধ্যে এ অঞ্চলের তরমুজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। শুরুরদিকে বেশ ভালো ফলন হলেও শেষের দিকে প্রাকৃতিকভাবে পরাগায়ন ও ব্যাকটেরিয়া জনিত কারনে ফুল ফলসহ কিছু তরমুজ গাছ মরে যাওয়ায় উৎপাদন কিছুটা কম হবে। তারপরেও আশা করছি বাজারে তরমুজের দাম ভালো থাকায় এ বছর সকল কৃষকরা লাভবান হবেন।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০