চরফ্যাশনে ৬৩টাকায় কৃষক পাচ্ছে সৌরবিদ্যুত সেচ সুবিধা


সেলিম রানা, চরফ্যাসন প্রতিনিধি: প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১১, ২০২২, ৬:১৭ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
চরফ্যাশনে ৬৩টাকায় কৃষক পাচ্ছে সৌরবিদ্যুত সেচ সুবিধা

 

 

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি’র) সৌরবিদ্যুচ্চলিত পাম্পের মাধ্যমে সেচ সুবিধা পাচ্ছে ভোলা জেলা চরফ্যাসন উপজেলার চারটি ইউনিয়নের কৃষক। এই সেচ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে ১০০ একর কৃষি জমি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি ইরি ও বোরো মৌসুমে প্রায় ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তরমুজের চাষাবাদ করায় এবং সেচ সুবিধা না থাকায় কিছু হেক্টর জমিতে ইরি এবং বোরো আবাদ বন্ধ রয়েছে। আবার কিছু অংশে চাষাবাদ করা হয়েছে। তুলনা মূলক গত বছরের চেয়ে ও এবার কৃষি চাষাবাদ কম হয়েছে বলে জানান।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) চরফ্যাসন অফিস সূত্রে জানা যায়, সৌরবিদ্যুচ্চালিত ক্ষুদ্র এ প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে উপজেলার চারটি ইউনিয়ন তারমধ্যে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে ১টি প্রকল্প রয়েছে ,আব্দুল্লাহপুর ২টি ও আবুবকরপুর ১ টি। এই সেচ সুবিধা নিশ্চিত করেছেন বিএডিসি প্রতিষ্ঠান। আরও জানা যায়, সৌরবিদ্যুচ্চলিত পাম্পের মাধ্যমে ভূ-উপরস্থ সেচে কৃষক পাচ্ছে প্রতি শতাংশ জমিতে ৫০ টাকা করে সেচ সুবিধা। তবে ইঞ্জিন চালিত পাম্পের তুলনায় তেমন খরচ করতে হচ্ছে না কৃষকদের। উপজেলায় এ ধরনের আরও ৪ টি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কিউসেক ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে ২৮ লিটার পানি উত্তোলন করা সম্ভব। সৌর বিদ্যুতের এক একটি প্যানেলে ৩১৫ ওয়াট ক্ষমতার ৫১টি সোলার প্যানেল নিয়ে সারাদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। তবে যতক্ষণ সূর্যের আলো থাকবে ততক্ষণ সেচ পাম্প চলবে। পাম্প হাউজটিতে আলোর চাহিদা পুরণে একটি সৌরচালিত ব্যাটারি রয়েছে। প্রতিটি পাম্পে ১৬ হাজার ৬৫ ওয়াট বিদ্যুৎ ধারণ করতে পারে। যা ২০ থেকে ২৫ একর জমির কৃষকরা সেচ সুবিধা পেতে পারে। (বিএডিসির) এই কর্মসূচি দিয়ে সমতলের ধান, শাক-সবজির সেচ সুবিধার আওতায় আনা সম্ভব বলে জানান।

উপকারভোগী কৃষক লোকমান হোসেন ও কামাল হোসেন জানান, এক সময় সেচের অভাবে জমি অনাবদী পড়ে থাকত। এক মৌসুম উৎপাদন করতে পারতাম। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে সেচ দিতে পারছি। ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার করলে শতাংশ প্রতি ৮৫ টাকা খরচ হতো তার তুলনায় সৌরবিদ্যুত চলিত পাম্পে শতাংশ প্রতি ৬৩ টাকা নেন সেচ কমিটি। তারা আরও বলেন ডিজেলের তুলায় এটার খরচ কম। কৃষকরা চায় এই সুবিধা যেন আরো ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।চরফ্যাশ উপজেলার হাজারীগঞ্জ ২ নম্বর ওয়ার্ডের সেচ কমিটির সভাপতি কৃষক আয়ুব আলী বলেন, সরকারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা চাষাবাদ করে সুফল পাচ্ছি। কারণ এতে সেচ খরচ নেই বললেই চলে। তিনি আরো বলেন, ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার করলে যে খরচ হতো তার তুলনায় এটি ২শ টাকা কমে সেচ সুবিধা পাচ্ছে কৃষক। এতে সেচের পানির অপচয় হচ্ছে না। ফলে খরচ কম হচ্ছে।

আমি কৃষকদের কাছ থেকে একর প্রতি ৫শ টাকা নেই ঠিক আছে। আমি তো প্রথমে সরকারি কোষাগারে এককালীন ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়েছি এবং বছর বছর ৭ হাজার টাকা জমা দেওয়া লাগে। তাই আমি ১০০ টাকা বেশি নেই কৃষকদের কাছে থেকে। চরফ্যাসন উপজেলা (বিএডিসি’র) সহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, চরফ্যাশন উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের কৃষক সৌরবিদ্যুত সেচ সুবিধা পাচ্ছে। বিএডিসি প্রত্যেক সমিতির কাছ থেকে পাম্পের জন্য এককালীন ৩০ হাজার টাকা ও বছরে ৭ হাজার টাকা নিয়ে সরকারের কোষাগারে জমা দিতে হয়। আর উপকারভোগী কৃষকরা শতাংশ প্রতি ৫০ টাকা সেচ কমিটি দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ভার্তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে আমি জানি না। এবং সৌরশক্তি ব্যবহার করে কৃষকদের সেচ সুবিধা নিশ্চিত করতে আরো বেশ কয়েকটি উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে বলে জানান।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০