ভারি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভাঙ্গার আতঙ্কে কাচা ও আধাপাকা ধান কাটতে মরিয়া সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের কৃষকদের প্রায় একই অবস্থা।যাদের ধান পাকা এবং আধাপাকা তারা বাধ্য হয়েই অধিক মজুরি দিয়ে ধান কেটে ঘরে তুলে আনছেন। উপজেলার শ্রীপুর উত্তর, শ্রীপুর দক্ষিণ ও বংশীকুন্ডা উত্তর এবং বংশীকুন্ডা দক্ষিণসহ প্রতিটি ইউনিয়ন ঘুরে একই চিত্র দেখাযায়।
উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের কৃষক ইজাজুল হক জানান মাত্র ৫কেয়ার জমি করেছিলাম বাঁধ ভাঙ্গার আতঙ্কে আধাপাকা প্রায় ৩ কেয়ার জমি কেটে ফেলেছি বাকি ২কেয়ার জমি একেবারে কাচা,বাধ্য হয়ে গরুর খড়ের জন্য কাচা ধানই কাটতে হইবে।
উপজেলার শ্রীপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের কৃষক জহুর মিয়া বলেন ২৪কেয়ার জমিতে বোর ধান লাগিয়েছি এর মধ্যে বিআর-২৮,বিআর-২৯ জাতের ধান রয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের নজরখালী বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় ৩কেয়ার জমির ধান তলিয়ে গেছে, অধিকাংশ ধান আধাপাকা ও কাচা আর সপ্তাহখানেক পর কাটতে পারলে মনে তৃপ্তি আসতো। কিন্তু যেভাবে ফসল রক্ষা বাঁধ ফাটল ধরে ধসে যাচ্ছে এর মধ্যে আবার আবহাওয়া সংস্থার পূর্বাভাস এতে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পানি বিপদসীমার অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না।
উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের শ্রীয়ারগাও গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন নদীতে পানি কিছুটা কমলেও ফসল হারানোর শঙ্কা এখনো রয়ে গেছে, প্রতিদিনই শুনতে পাই ফসল রক্ষা বাঁধের ফাটল ও ধসে যাওয়ার খবর।জানি না এতো কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারব কি-না।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে জানান বাংলাদেশ আবহাওয়া অধীদপ্তর ও অন্যান্য বৈশ্বিক আবহাওয়া সংস্থার বরাত দিয়ে জানান আগামী ১৭এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ উত্তর-পূর্বাঞ্চল,সংলগ্ন ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুরমা, কুশিয়ারা, যাদুকাটার কয়েকটি পয়েন্টে দিয়ে পানি বিপদসীমার অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। উনি দ্রুত ধান কাটার জন্য অনুরোধ জানান। ধান ৮০ ভাগ পাকলেই তা দ্রুত কেটে ফেলতে হবে।জরুরী বিজ্ঞপ্তিতে আর জানান যে কোন হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ফাটল বা ধসে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে দ্রুত স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করার জন্যও তিনি বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানান।এবং সবাই মিলে এই দুর্যোগ মোকাবিলা করার জন্য আহবান জানান।