২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

দু’উপজেলায় সূর্যমুখী ফুল চাষাবাদে বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। , প্রকাশিত হয়েছে-

 

বরগুনার আমতলী ও তালতলীতে এবার সূর্যমূখী ফুলের চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের সমারোহ এখন মাঠে মাঠে ছেয়ে গেছে। ওই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে আসছে ফুল প্রেমিকেরা। বাজারে সূর্যমুখী ফুল ও তৈলবীজের দামও ভালো থাকায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ বছর দু’উপজেলায় ৯০০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুল চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হলেও দু’উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে ৬৯২ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছে। এরমধ্যে আমতলী উপজেলায় ২৮০ এবং তালতলী উপজেলায় ৪১২ হেক্টর জমি। লক্ষমাত্রা অর্জিত না হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষকৃত জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে।

দু’উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নেই কমবেশী সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ হয়েছে। তবে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া, হলদিয়া ও আমতলী সদর এবং তালতলী উপজেলার শারিকখালী, বড়বগী ও ছোটবগী ইউনিয়নে বেশী চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে সূর্যমূখী বীজ বিতরণ করা হয়। এ বীজ বপনের পর ফুল ও তেল সংগ্রহ করতে প্রায় ৩ মাস সময় লাগে। খরচ কম ও দাম ভালো থাকায় সূর্যমুখী ফুল চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে এ অঞ্চলের কৃষকেরা। লাভজনক হওয়ায় ওই ফুল চাষাবাদেও কৃষকরা সফলতা পাচ্ছেন।

সূর্যমুখীর বীজ দ্বারা তৈরী তৈল চর্বি বিহীন। ওই তৈল হৃদরোগীদের জন্য অনেক উপকারী। সূর্যমুখী ফুল ও তৈল দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাজারে এখন ১ লিটার সূর্যমূখী তৈল ২৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতি কেজি বীজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায়।

সরেজমিনে আমতলী ও তালতলী উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে। মাঠের চারিদিকে হলুদ রংয়ের ফুল আর ফুল। এ যেন এক অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। ওই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দুর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসছে ফুল প্রেমিকেরা। অনেক ফুল প্রেমিককে ফুলের মধ্যে ও সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেও দেখা গেছে।

আমতলী সদর ইউনিয়নের মানিকঝুড়ি সাতধারা গ্রামের কৃষক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার বলেন, পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষাবাদ ভালো হয়ে থাকে। এ চাষাবাদে ঝুঁকি ও খরচ কম এবং লাভ বেশি। আমি এবছর ৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছি। বাম্পার ফলন হয়েছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর বাজারে দামও বেশী।

তালতলীর বড়বগী ইউনিয়নের কৃষক মোঃ শাহাদাত হোসেন জানায়, এ বছর সে ৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আরো সহযোগিতা পেলে সূর্যমুখী চাষাবাদ রবি ফসল হিসেবে গন্য হবে এবং কৃষকেরা লাভবান হবে।

আমতলী ও তালতলী উপজেলা (অতিরিক্ত) কৃষি কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, দু’উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষমাত্রা অর্জিত না হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকেরা বাজারে দামও ভালো পাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ বিতরণ করাসহ সূর্যমুখী ফুল চাষে তাদের সহযোগিতা করা এবং দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।