২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মাছের ঘেড়ে লবন পানি উঠাতে গিয়ে ৩০ একর বোরো ফসলের সর্বনাস!

হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। , প্রকাশিত হয়েছে-

বরগুনার তালতলীতে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে মাছের ঘেড়ে লবন পানি উঠাতে গিয়ে কৃষকের ৩০ একর বোরো ফসলের সর্বনাস করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পানিতে ক্ষেতের ফসল ঝলসে গেছে। ফসল ফলার আর কোন সম্ভাবনা নেই। সোনাকাটা ইউনিয়নের সকিনা ও নিদ্রারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থাণীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের সকিনা ও নিদ্রারচর এলাকার ২৭ জন কৃষক এনজিও থেকে ঋণ ও ধারদেনা করে ৩০ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেন। ধানের ফলন ভাল হলেও স্থানীয় প্রভাবশালী মালেক আকন ৪ এপ্রিল অমাবস্যায় আমখোলা খালের স্লুইজসগেট খুলে দিয়ে তার চিংড়ি ঘেড়ে সাগরের লবন পানি উঠায়। এসময় জোয়ারে লবন পানিতে কৃষকের রোপন করা বোরো ধানের ক্ষেত তলিয়ে যায়। ক্ষেতে লবন পানি প্রবেশের এক সপ্তাহের মধ্যে কৃষকদের বোরো ধানের গাছগুলো শুকিয়ে ঝলসে গেছে। ক্ষেত দেখলে মনে হবে আগুনের কারনে ক্ষেত পুড়ে গেছে। ক্ষেতের এঅবস্থা দেখে কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মনির আকন বলেন, মুই এনজিওতে গোনে লোন আইন্যা ২ একর বোরো ধান লাগাইছি। মালেক আকন হ্যার ঘেরে নুন পানি উডানের লইগ্যা মোগো হককুলডির সর্বনাস হরছে। মোরা এইয়ার বিচার চাই।

আরেক কৃষক নিজাম জোমাদ্দার বলেন, মোর দেড় একর জমির ধান নুন পানিতে পুইর‌্যা গ্যাছে। এ্যাহন মাইয়া পোলা লইয়া কি খামু। আর কি দিয়া দেনা হোদ (পরিশোধ) হরমু। হ্যাই চিন্তায় এ্যাহন রাইতে ঘুম অয় না।

অভিযুক্ত মালেক আকন বলেন, আমার চিংড়ি ঘেরে লবন পানি উঠাতে গিয়ে অজান্তে পাশের ফসলি জমিতে লবন পানি ঢুকে ধান পুরে গেছে। এটা আমি ইচ্ছকৃতভাবে করিনি। বিষয়টি স্থানীয়দের নিয়ে সমাধান করা হবে।

তালতলী উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সিএম রেজাউল করিম বলেন, খোজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের ক্ষতিপূরনের কোন ব্যাবস্থা নেই। তবে মালেক আকনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের নিকট সুপারিশ করা হবে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাওসার হোসেন বলেন, এবিষয়ে আমার কাছে স্থানীয় কৃষকরা মালেক আকন নামে এক জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।