২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

হলুদ তরমুজ চাষে সফল কৃষক

কালাম সরদার, শরীয়তপুর প্রতিনিধি।। , প্রকাশিত হয়েছে-

যে জমিতে গত দুই বছর আগেও বোরো ধানের চাষ হতো, সেখানে আজ মাচার মধ্যে দুলছে বাহারি তরমুজ। টাকার অভাবে লেখাপড়াটাও বেশি দূর আগায়নি। খুব বেশি পড়ালেখা না করলেও তার চিন্তা-চেতনা ছিল ভিন্নধর্মী। কীভাবে একজন সফল কৃষক হওয়া যায় সেই চিন্তায় সময় কাটত তার। এ সময় এক বন্ধুর কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করে একটি স্মার্ট ফোন কিনেন। এরপর সে স্মার্ট ফোনে ইউটিউবে গিয়ে বার বার দেখেন বিভিন্ন কৃষি বিষয়ক বিষয়াবলী।

ভাবতে থাকেন কোন পণ্য চাষাবাদ করলে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এরপরই হঠাৎ করে তার দৃষ্টিগোচর হয় মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ। বার বার দেখে নজরে এলো হলুদ তরমুজের। সে চিন্তা মাথা রেখে যোগাযোগ হয় সাতক্ষীরার এক সফল তরমুজ চাষি সঙ্গে। তার কাছ থেকে সব নিয়ম-কানুন জেনে নেয়। এরপর থেকে শুরু করে তরমুজের চাষাবাদ।

এভাবেই তরমুজ চাষ শুরু করে আজ সফলতা পান শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বড় নওঁগাও গ্রামের কৃষক আনোয়ার বেপারি। বুধবার বিকালে কথা হয় আনোয়ার বেপারির সঙ্গে। এ সময় আনোয়ার বলেন, গত বছর ইউটিউব দেখে সাতক্ষিরার এক কৃষক ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথমে দশ শতক জমিতে চাষ শুরু করি। এতে করে আমার ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতার অভাবে আমার সমস্ত ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও আমি থেমে যাইনি আবার নতুন করে লোন নিয়ে ৯২ হাজার টাকা খরচ করে ২০ শতক জমিতে চাষাবাদ শুরু করি। সেই ক্ষেত থেকে গত বছর প্রায় দেড় লাখ টাকা লাভ করি। তাই এবার নতুন করে আরও ২০ শতক জায়গায় নিয়ে মোট ৪০ শতক জায়গায় এ হলুদ তরমুজের চাষ শুরু করি। গেল বছরের তুলনায় এবার ফলন আরও ভালো হয়েছে। আশা করি এবার সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ বছর প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা লাভ হবে ইনশাআল্লাহ।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাচার মধ্যে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলে আছে বিভিন্ন সাইজের বাহারি তরমুজ। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ক্রেতাদের পদচারণা থাকে চোখে পরার মত। ক্রেতারা আসছে ক্ষেত ঘুরে ঘুরে দেখছে এবং পছন্দ মত তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। হলুদ তরমুজগুলো কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। হলুদ তরমুজ ছাড়াও দেশীয় তরমুজ ও সৌদি আরবের ফল সাম্মামও চাষ করছে চাষি আনোয়ার।

কৃষক আনোয়ার আরও বলেন, সরকার যদি বিনা সুদে আমাদের মত নতুন চাষিদের ঋণ দেয়। তাহলে এই হলুদ তরমুজ চাষকে বিপ্লবে পরিণত করা যাবে। এমনি আমাদের দেশের চাহিদা পূরণ করে এ তরমুজ বিদেশেও রফতানি করা যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ আজিজুর রহমান জানান, লোকমুখে শুনেছি পূর্ব ডামুড্যা ইউনিয়নে এক কৃষক তরমুজ চাষ করছেন। তিনি যদি আমাদের অফিসে কোনো সুযোগ-সুবিধা চান আমরা তাকে আমাদের সাধ্যমতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করব।