২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

মুস্তাফিজদের পরাজয় শেষদিকে বিতর্ক ছড়িয়ে

ক্রীড়া ডেস্ক , প্রকাশিত হয়েছে-

 

রাজস্থান রয়্যালসের ছুঁড়ে দেওয়া ২২৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মুস্তাফিজুর রহমানের দিল্লি ক্যাপিটালস একটা সময় ম্যাচ থেকে ছিটকেই গিয়েছিল। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৩৬ রান। তখনই তিন বলে তিন ছক্কা মেরে খেলা জমিয়ে দিলেন রভম্যান পাওয়েল।

তৃতীয় বলটায় ঘটে গেল নাটক। ওবেদ ম্যাকয়ের করা কোমড় থেকে একটু উঁচুতে করা এক ফুলটস থেকে তৃতীয় ছক্কাটা মারেন পাওয়েল। মাঠে থাকা দুই ব্যাটার, ডাগআউটে বসা দিল্লির খেলোয়াড়-স্টাফরা নো বলের আবেদন করলেও তাতে আর সাড়া দেননি দুই আম্পায়ার, তৃতীয় আম্পায়ারের কাছেও সিদ্ধান্তটা ছেড়ে দিতে ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন দিল্লির খেলোয়াড়রা, তাতেও আম্পায়ারদের মন গলেনি। তাতে চটে গিয়ে ডাগআউট থেকে অধিনায়ক ঋষভ পান্ত ব্যাটারদের চলে আসতে বলেন মাঠ ছেড়ে, পাওয়েল আর কুলদীপ যাদব মাঠ ছাড়তে বসলে আম্পায়াররা থামান তাদের। এরপর পান্ত এক স্টাফকে পাঠান আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে, তবে লাভের লাভ কিচ্ছু হয়নি। এই বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পরই খেলার মোমেন্টাম হারিয়ে বসে দিল্লি। প্রথম তিন বল থেকে ১৮ রান তুললেও পরের তিন বল থেকে আর ১৮ তুলতে পারেনি। ম্যাচটা হারে ১৫ রানে।

শেষটা এমন নাটুকে হবে, শুরুটা অবশ্য তেমন বলেনি।ওয়াংখেড়েতে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দিল্লির জস বাটলার রীতিমতো তাণ্ডবই বইয়ে দেন দিল্লির বোলারদের ওপর। ২২৩ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য প্রায় তাড়াই করে ফেলেছিল তারা। পৃথ্বি শ (২৭ বলে ৩৭) আর ডেভিড ওয়ার্নার (১৪ বলে ২৮) করেন উড়ন্ত শুরু। মাঝে ম্যাচটা ‘জীবিত’ রাখেন রিশাভ পান্ত (২৪ বলে ৪৪) আর ললিত যাদব (২৪ বলে ৩৭)।

শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৩৬ রান। কিন্তু প্রসিধ কৃষ্ণা ১৯তম ওভারে এসে যাদবকে আউট করে উইকেট মেইডেন নিলে বলতে গেলে শেষ হয়ে যায় দিল্লির আশা। শেষ ওভারের নাটক না হলে রাজস্থানের সহজ জয়ই পাওনা ছিল। ৮ উইকেটে ২০৭ রানে থামে দিল্লি।

প্রসিধ ২২ রানে নেন ৩টি উইকেট। ২ উইকেট শিকার রবিচন্দ্রন অশ্বিনের।

এর আগে জস বাটলারের অতিমানবীয় এক সেঞ্চুরিতে ২ উইকেটে ২২২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় রাজস্থান রয়্যালস।

টাইগার পেসার মোস্তাফিজ নিয়েছেন সবচেয়ে মূল্যবান বাটলারের উইকেটটি। তবে সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ৪৩ রান দিয়েছেন কাটার মাস্টার।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনে শুরু করেন রাজস্থানের দুই ওপেনার দেবদূত পাডিক্কেল আর জস বাটলার। প্রথম তিন ওভারে তারা তোলেন মাত্র ১২ রান।

চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানকে আক্রমণে আনেন দিল্লি অধিনায়ক রিশাভ পান্ত। প্রথম ওভারটা ভালো হয়নি কাটার মাস্টারের। দেবদূত পাডিক্কেলের কাছে টানা তিন বাউন্ডারি হজম করে দেন মোট ১৪ রান।

১২তম ওভারে আবারও মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন পান্ত। দিল্লির দুই ওপেনার পাডিক্কেল আর বাটলার তখন রূদ্ররুপে। ১১ ওভারেই ১০০ পার করে ফেলেছেন জুটিতে। মোস্তাফিজ ওই ওভারে বাটলারের এক বাউন্ডারি হজম করলেও দেন মাত্র ৬ রান।

১৫ ওভারে ১৫৫ রান তোলেন বাটলার-দেবদূত। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে দেবদূতকে (৩৫ বলে ৫৪) ফিরিয়ে জুটিটি অবশেষে ভাঙেন খলিল আহমেদ।এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। রিভিউ নিয়ে জিতে যায় দিল্লি।

ওই ওভারেই আইপিএল ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন বাটলার, ৫৭ বলে। ১৭তম ওভারে মোস্তাফিজ দেন ৯ রান, তৃতীয় বলে চার মারেন সঞ্জু স্যামসন।

১৯তম ওভারে এসে সেট ব্যাটার বাটলারের হাতে টানা দুই বলে চার আর ছক্কা হজম করেন মোস্তাফিজ। ছক্কাটি অবশ্য ক্যাচ হতে পারতো। কিন্তু রভম্যান পাওয়েলের হাতের কাছ দিয়ে সীমানার বাইরে পড়ে।

ওই ওভারের শেষ বলে অবশেষে বিধ্বংসী বাটলারকে তুলে নেন মোস্তাফিজই। লং অনে তার ক্যাচ নেন ওয়ার্নার। ৬৫ বলে ৯ বাউন্ডারি আর ৬ ছক্কায় বাটলারের উইলো থেকে বেরিয়ে আসে ১১৬ রানের ইনিংস।

শেষদিকে ঝড় তুলেন সঞ্জু স্যামসন। শার্দুল ঠাকুরের শেষ ওভারে দুই চার আর এক ছক্কায় ২০ রান তুলে নেন রাজস্থান অধিনায়ক। ১৯ বলে অপরাজিত থাকেন ৪৬ রানে।