কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ভিড় শেষ দিনের টিকিট পেতে


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২৭, ২০২২, ৯:৪২ পূর্বাহ্ণ / Print This Post Print This Post
কমলাপুরে ঘরমুখো মানুষের ভিড় শেষ দিনের টিকিট পেতে

 

পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এবারের শেষ দিনের মতো রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলছে। বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। আজ পঞ্চম দিনে দেওয়া হচ্ছে আগামী ১ মের টিকিট।

আজও স্টেশনে রয়েছে টিকিট প্রত্যাশীদের উপচেপড়া ভিড়। শেষ দিনে টিকিট সংগ্রহের জন্য ঘরমুখো মানুষের আপ্রাণ প্রচেষ্টা। বুধবার ট্রেনের টিকিট না পেলে খুঁজতে হবে বিকল্প উপায়।

১ মের টিকিট পেতে কমলাপুরে গতকাল বিকাল থেকেই মানুষের লাইনে সিরিয়াল দেওয়া শুরু করে। প্রতিটি কাউন্টারের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন। এই লাইনে কেউ দাঁড়িয়েছেন গতকাল বিকেলে, সন্ধ্যায়, রাতে, কেউবা আজ ভোরে এসে যুক্ত হয়েছেন। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার সময় এই লাইন আরো দীর্ঘ হয়ে একে বেঁকে বাহিরের রাস্তায় চলে গেছে।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, আগে থেকেই যাত্রীরা নিজ উদ্যোগে লাইনে দাঁড়ানোর সিরিয়াল লিখে রেখেছেন। সবাই যাতে সিরিয়াল মেনে টিকিট নিতে পারেন এজন্যই তারা এমনটি করেছেন। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বা আরএনবি। লাইনের বাইরে কেউ যেতে চাইলেই পেছন থেকে অন্যরা চিৎকার করে বাধা দিচ্ছেন। এতে কেউ লাইনের আগে যেতে সাহস করছেন না।

এছাড়া লাইন ঠিকঠাক রাখতে কিছুক্ষণ পরপরই বাঁশি বাজিয়ে সতর্ক করছেন আরএনবি এবং আনসার সদস্যরা। কালো বাজারে যেন টিকিট বিক্রি সেজন্য স্টেশন এলাকায় নিয়োজিত রয়েছের র্যাব, পুলিশ, ডিএমপি পুলিশসহ আনসার সদস্যরা। র্যাব-পুলিশের বুথও রয়েছে স্টেশন এলাকায়।

আলমগীর মিয়া খুকু মঙ্গলবার রাত ১০টার পরপরই স্টেশনে চলে এসেছেন। তিনি বাসের টিকিট না পেয়ে ট্রেনের টিকিট কাটবেন, এমন প্রত্যাশা নিয়েই দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করছেন। খুকু মিয়া বলেন, সড়ক-মহাসড়কে প্রচুর যানজট থাকে। এরপরও বাসের টিকিটের জন্য চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু টিকিট পাইনি। তাই ট্রেনের টিকিটের জন্য দুই বন্ধু স্টেশনেই রাত পার করেছি।

একই কথা বলেন অপর টিকিটপ্রত্যাশী ইমরান হুসাইন। তিনি বলেন, এবারের ঈদ যাত্রায় সড়কে প্রচুর যানজটের সৃষ্টি হবে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আগেই নিউজ দেখেছি। এজন্য বাসের টিকিটের জন্য চেষ্টা করিনি। স্টেশনে আমরা কয়েকজন দুই দিন ধরে অপেক্ষা করছি টিকিট পেতে। ঈদে ট্রেন যাত্রায় তেমন সমস্যা তৈরি হয় না, আবার ভাড়ার পরিমাণও কম। আমাদের জন্য ট্রেন যাত্রাই নিরাপদ। গতকাল টিকিট পাইনি, আশা করি আজ টিকিট পাবো, গ্রামে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পরবো।

ইন্টারনেটেও ই-টিকিটিংয়ের মাধ্যমে অগ্রিম টিকিট বিক্রি সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়েছে। সেখানেও চরম ভোগান্তির অভিযোগ উঠেছে।

এর আগে শনিবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে দেওয়া হয় ২৭ এপ্রিলের টিকিট। ‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’ নিশ্চিত করতে যাত্রীদের এনআইডি বা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি কাউন্টারে প্রদর্শন করে টিকিট কিনতে হচ্ছে। একজন যাত্রী একসঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি টিকিট কিনতে পারবেন। ঈদের অগ্রিম বিক্রিত টিকিট ফেরত নেওয়া হবে না।

আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শনিবার (২৩ এপ্রিল) থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। রোববার (২৪ এপ্রিল) দেওয়া হয় ২৮ এপ্রিলের টিকিট, ২৫ এপ্রিল দেওয়া হয় ২৯ এপ্রিলের টিকিট, ২৬ এপ্রিল দেওয়া হয় ৩০ এপ্রিলের টিকিট। আর আজ ২৭ এপ্রিল দেওয়া হচ্ছে ১ মে’র টিকিট।

এছাড়া ৩ মে ঈদ হলে ২৮ এপ্রিল বিক্রি হবে ২ মে’র ট্রেনের টিকিট। ঈদ যাত্রা শেষে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১ মে থেকে।

এবারের ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের সুবিধার্থে ছয় জোড়া বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। আজ থেকে ট্রেনে আনুষ্ঠানিক ঈদ যাত্রা শুরু হয়েছে।

যাত্রীর চাপ কমানোর লক্ষ্যে ঢাকা শহরের ৫টি কেন্দ্রে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানগুলো হলো- কমলাপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, তেজগাঁও, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ও ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন)।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০