থেমে থেমে বৃষ্টি: পানিতে ভাসছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন


ফিরোজ আহম্দে, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: প্রকাশের সময় : মে ১১, ২০২২, ৫:৪১ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
থেমে থেমে বৃষ্টি: পানিতে ভাসছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন

 

ক্ষেতের পাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য জড়ো করেছেন কৃষক লাল্টু মিয়া। তবে হঠাৎ করেই দুপুরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ভিজে যায় সেই ধানের কিছু অংশ। আর বাকি ধান বৃষ্টিতে ভেজার হাত থেকে রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেন। তবে ভিজে যাওয়ার ধানের কিছু অংশ নষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান ওই কৃষক।

গত ৯ মে সোমবার থেকে থেকে ঝিনাইদহে থেমে থেমে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে কেটে রাখা ধান নষ্ট হচ্ছে। কিছু ধান আবার হেলে পড়েছে। যে সব জমির ধান কাটা হয়েছিল সে সব ধান ক্ষেতেই চারা গজিয়ে গেছে। অনেক ক্ষেতের পাকা ধান মাটিতে নূইয়ে পড়েছে। অনেক জমিতে জমে থাকা পানি কেটে রাখা ধানের ওপরে উঠে গেছে। অনেকে আবার ভিজা ধানই আটি বেধে বাড়ি আনার চেষ্টা করছে। তবে ভিজে যাওয়া ধানের বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে যাবে বলে কৃষকরা বলছেন।

এর আগে জেলার সাধুহাটিসহ বিভিন্ন এলাকায় বৈরি আবহাওয়ার হাত থেকে ধান রক্ষার জন্য ৮০ ভাগ পেকে গেলেই তা কেটে ফেলার জন্য কৃষকদের সচেতন করতে মাইকিং করা হয়। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে চলতি বছর জেলায় বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ৮৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। ইতোমধ্যেই আবাদকৃত ৩২ ভাগ জমির ধান কর্তন করা হয়েছিল। এরমধ্যে সামান্য কিছু ধান কৃষক বাড়িতে আনতে পেরেছিল। এরমধ্যে বৈরি আবহাওয়ার ফলে দফায় দফায় বৃষ্টিতে ক্ষেতের পাকা ধানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চরম হতাশায় পরেছে কৃষক। একদিকে শ্রমিক সঙ্কট, অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়া যেন তাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জেলা সদরের ভরুয়াপাড়া গ্রামের কৃষক লাল্টু মিয়া জানান, ১০ কাঠা জমির পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে কিছু ধান ভিজে গেছে আর কিছু পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছি। ভিজে যাওয়া ধানের মধ্যে অল্প কিছু পানি লাগার কারনে নষ্ট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

সদর উপজেলার লাউদিয়া এলাকার কৃষক কাইয়ুম হোসেন জানান, রোববার সকালে দুই বিঘা জমির ধান কেটেছেন। কিন্তু সোমবারের বৃষ্টিতে মাঠে কেটে রাখা ধান পানিতে ভিজে গেছে। এএরপর দফায় দফায় বৃষ্টিতে কেটে রাখা ধানেরে প্রায় সবই নষ্ট হয়ে গেছে বলে যোগ করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের উল্ল্যা গ্রামের তৈয়েবুর রহমান জানান, এ বছর আড়ায় বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলাম। কষ্টার্জিত ফসল ঘরেতোলার আগেই বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে তার জমির পাকা ধান।

কোটচাঁদপুর উপজেলা কাঠালিয়া গ্রামের শফিকুর রহমান জানান, আমার এক বিঘা জমির ধান কেটেছিলাম। দুইদিন পর ধান বেধে বাড়ি আনবে, এমন মুহুর্তে ভারি বৃষ্টিতে সব ভিজে গেছে। এরপর দফায় দফায় বৃষ্টির ফলে ক্ষেতের ধানে চারা গজিয়ে গেছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, বৃষ্টিতে কেটে রাখা কিংবা পড়ে যাওয়া ধান চারা গজিয়ে কিংবা ঝরে কিছুটা ক্ষতিতো হবেই। তবে যদি বৃষ্টি দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে কৃষককের ক্ষতির মাত্রা বাড়বে।

 

 


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১