২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

নাইমের ঘূর্ণিতে শ্রীলঙ্কা ৩৯৭ রানে অলআউট

ক্রীড়া ডেস্ক , প্রকাশিত হয়েছে-

 

সফরকারী শ্রীলঙ্কা আজ সকালে ৪ উইকেটে ২৫৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের ব্যাটিং শুরু করে । বোলিং ঘূর্ণিতে লঙ্কানদের একাই কুপোকাত করেছেন টাইগার বোলার নাঈম হাসান। তুলে নিয়েছেন ছয় উইকেট। এক রানের আক্ষেপ নিয়ে ডাবল সেঞ্চুরির থেকে দূরে থাকতেই শেষ ব্যাটার হিসেবে ফিরে গেছেন একাই লড়ে যাওয়া অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাস্থিউস। এ অলরাউন্ডারকে ব্যক্তিগত ১৯৯ রানে ফিরিয়ে দিয়েছেন নাঈম আর সেইসাথে ৩৯৭ রানে থেমেছে লঙ্কানদের প্রথম ইনিংস।

চট্টগ্রামে সফরকারীদের আরও আগেই গুটিয়ে ফেলা যেত। লাঞ্চের আগে পরে জোড়া আঘাতে শ্রীলঙ্কাকে এলোমেলো করে দিয়েছিলেন নাঈম-সাকিব। দুজনের ঘূর্ণিতে ৫ উইকেটে ৩১৯ রান থেকে মাত্র ৩.৩ ওভারে স্কোর গিয়ে দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৩২৮। সেখান থেকে লঙ্কানরা মোটামুটি একটা শক্ত অবস্থানে পৌঁছায় নবম উইকেটে ম্যাথুজ-ফার্নান্ডোর ৪৭ রানের জুটির কল্যাণে।

দ্বিতীয় সেশনে এই দুজনের প্রতিরোধেই সফরকারী দল ৮ উইকেটে ৩৭৫ রান নিয়ে বিরতিতে গিয়েছিল। কিন্তু তৃতীয় সেশনে বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সফরকারীদের প্রতিরোধ।

তার আগে শরিফুলের বলে বিশ্ব ফার্নান্ডো হেলমেটে আঘাত প্রাপ্ত হয়েছিলেন। রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ায় বিরতির পর তার জায়গা নামেন আসিথ ফার্নান্ডো। মূলত কিছুক্ষণ প্রতিরোধ গড়তেই তার নামা। সেটি করতে করতে ২৭ বল খেলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাকে বোল্ড করে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ৫ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েন নাঈম।

বিশ্ব ফার্নান্ডো তার পর নামলেও কাঙ্ক্ষিত ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পাননি ম্যাথুজ। ১৯৯ রানে থাকা অবস্থায় নাঈমের বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে তালুবন্দি হন সাকিবের। তাতে ৩৯৭ বলের ইনিংসটির সমাপ্তি ঘটে সেখানেই। যাতে ছিল ১৯টি চার ও একটি ছয়।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই বিপজ্জনক ম্যাথুজকে ফেরানো যেত। কিন্তু বাংলাদেশ ক্যাচের আবেদন না করায় দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনটা কর্তৃত্ব করে ম্যাথুজ-চান্ডিমাল জুটি। লাঞ্চ ব্রেকের কিছুক্ষণ আগে এই জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান অফস্পিনার নাঈম।

১১৪তম ওভারের প্রথম বলে চান্ডিমাল রিভার্স সুইপ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বলের লাইন বুঝতে না পারেননি। পরাস্ত হওয়ায় স্বাগতিকদের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ নেন লঙ্কান ব্যাটার। তাতেও ইতিবাচক কিছু মেলেনি। চান্ডিমালের বিদায়ে ভাঙে ১৩৬ রানের মহামূল্যবান পঞ্চম উইকেট জুটি।

১৪৮ বল খেলা চান্ডিমাল করতে পারেন ৬৬ রান। তাতে ছিল ৩টি ছয় ও ২টি চার। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে দিকবেলা নামলেও প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। একই ওভারে নাঈমের জোড়া আঘাতের শিকার হন। তার ঘূর্ণিতে পুরোপুরি পরাস্ত হন দিকবেলা। সরে গিয়ে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ৩ রানে।

বিরতির পর তাদের আরও এলোমেলো করে দেন সাকিব আল হাসান। শেষ স্বীকৃত ব্যাটার দিকবেলা ফেরার পর দেখার ছিল লেজের ব্যাটাররা ম্যাথুজকে সঙ্গ দিতে পারেন কিনা। ম্যাথুজ বার বার সঙ্গীদের টিকে থাকার পরামর্শ দিলেও সাকিব দ্বিতীয় সেশনে দ্রুত দুই উইকেট নিয়ে তা হতে দেননি। এই সেশনের দ্বিতীয় বলেই রামেশ মেন্ডিসকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন। পরের বলে তার ঘূর্ণি বুঝতে পারেননি এম্বুলদেনিয়া। ব্যাক প্যাডে বল লাগায় সাকিব লেগবিফোরের আবেদন করেন। আম্পায়ার কিছুক্ষণ সময় নিয়ে আঙুল তুলে দিলে হ্যাটট্রিকের দ্বারপ্রান্তে চলে যান তিনি। শেষ পর্যন্ত হয়নি যদিও। তবে সাকিব সফরকারী দলকে তখন পথভ্রষ্ট করে ছেড়েছিলেন। সেখান থেকে ধীরে ধীরে লঙ্কানদের মনে আশার সঞ্চার করে ম্যাথুজ-ফার্নান্ডো জুটি। তাদের ৪৭ রানের ‍জুটিতেই প্রথম ইনিংসের সংগ্রহটা চারশো ছুঁই ছুঁই হয়েছে।

অফস্পিনার নাঈম ছিলেন সবচেয়ে সফল। ৩০ ওভারে ১০৫ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন। লঙ্কানদের বড় সংগ্রহের পথে বাধা হয়ে ছিলেন তিনিই। সাকিব ৩৯ ওভার বল করে ৬০ রানে নিয়েছেন ৩টি। মেডেনও দিয়েছেন ১২ ওভার। তাইজুল ৪৮ ওভারে ১০৭ রানে নিয়েছেন একটি উইকেট।