ভারতে পালিয়ে থাকার পর ধরা পড়া পি কে হালদারসহ তার ৫ সহযোগীর ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন কলকাতার একটি আদালত। এর আগে মঙ্গলবার (১৭ মে) সকালে পি কে হালদারের ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্র জানায়, চলতি সপ্তাহের শনিবার পি কে হালদারসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে ইডি। পরে তাদের উত্তর চব্বিশ পরগনার একটি আদালতে তোলা হলে তদন্তের স্বার্থে পাঁচজনকে ১৭ মে পর্যন্ত ইডি হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। আর আটক এক নারীকে ১৭ মে পর্যন্ত কারা হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর এক বিবৃতিতে ইডি বলেছে, হাজার কোটি টাকা পাচারকারী পি কে হালদার নাম পাল্টে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশে বসবাস করতেন। প্রদেশের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি।
ইডি বলেছে, ব্যক্তিগত আইনজীবী সুকুমার মৃধার সহায়তায় পি কে হালদার পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের একাধিক রাজ্যে বিপুল সম্পদ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থপাচারের মাধ্যমে ভারতে একাধিক অভিজাত বাড়িসহ বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে খোঁজ পেয়েছে ইডি।
দেশটির কেন্দ্রীয় এই তদন্ত সংস্থা বলছে, তারা ইতোমধ্যে পি কে হালদারের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেছেন। এসব নথিতে প্রাথমিকভাবে ভারতে তার ২০ থেকে ২৫টির মতো বাড়ির মালিকানার তথ্য মিলেছে। এ ছাড়া অভিযানের সময় পি কে হালদারের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থও জব্দ করা হয়েছে।
পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ৩৬টি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যাংক ও বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কমপক্ষে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি আত্মসাত, অর্থ পাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে এই মামলাগুলো করা হয়েছে।
পি কে হালদারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ২৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় বাংলাদেশের উচ্চ আদালত। এ তালিকায় সুকুমার ও তার মেয়ে অনিন্দিতাও ছিলেন। পরে এ দু’জনসহ ৬২ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করে দুদক।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেছেন, পি কে হালদারকে দ্রুত দেশে ফেরাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।