খালেদাকে পদ্মা সেতুতে নিয়ে পানিতে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী


ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশের সময় : মে ১৯, ২০২২, ৪:৫১ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
খালেদাকে পদ্মা সেতুতে নিয়ে পানিতে টুস করে ফেলে দেওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের শুরুর দিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়া বলেছিলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে। কারণ স্প্যানগুলো যখন বসানো হচ্ছিল, সেটা তার কাছে জোড়াতালি মনে হয়েছিল। বলেছিলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো হচ্ছে, ওখানে চড়া যাবে না। চড়লে ভেঙে পড়বে। তার সঙ্গে তার কিছু দোসরও (এভাবে বলেছিল)। তাদের কী করা উচিত? পদ্মা সেতুতে নিয়ে গিয়ে ওখান থেকে টুস করে পদ্মায় ফেলে দেওয়া উচিত।’
পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন করার কথা থাকলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়, এই অর্থায়ন বন্ধের পেছনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা আছে অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর যিনি একটা এমডি পদের জন্য পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করেছেন, তাকেও পদ্মায় নিয়ে দুটি চুবানি দিয়ে উঠিয়ে নেওয়া উচিত। মরে যাতে না যান, পদ্মায় একটু চুবানি দিয়ে সেতুতে তুলে দেওয়া উচিত। তাহলে যদি এদের শিক্ষা হয়।’
বুধবার (১৮ মে) প্রধানমন্ত্রী তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
দেশের টাকায় নির্মিত পদ্মা সেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সেই প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যে নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরি করতে পারে, সেটা আজ আমরা প্রমাণ করেছি।’
মেগা প্রকল্প নিয়ে বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু নতুন আঁতেল আবার জুটেছে, একজন অর্থনীতিবিদ তো বলেই দিলো, রূপপুরে সরকার যে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র করেছে, সেটা নাকি অর্থনৈতিকভাবে ভীষণ ক্ষতিকর। আর বাংলাদেশের বর্তমান উন্নয়নটা বাইরের লোক দেখলেও তারা চোখে দেখে না।’
তিনি বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) সঙ্গে আবার তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী যোগ হয়েছে। এরা অর্বাচীনের মতো কথা বলে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন আর সেটা নিয়ে কথা বলে লাভ নেই বিধায় এখন পদ্মা সেতুর রেললাইন নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এর বাবদ ঋণের টাকা কীভাবে শোধ হবে, কারণ দক্ষিণ বঙ্গের কেউ তো রেলে চড়বে না। তারা লঞ্চে যাতায়াত করে থাকে। কাজেই এটা ভায়াবল হবে না, এমনই তাদের বক্তব্য।’
এক সময় ‘কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট’ এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নিয়েও অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার করে দেওয়া বেসরকারি টেলিভিশন ও অবাধ তথ্য প্রবাহের সুযোগ নিয়ে আজকাল ‘টক শো’ সহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে সরকারের সমালোচনা চলছে। যে সুযোগ জিয়া, এরশাদ বা খালেদা জিয়া কারও আমলে ছিল না। ‘টক শো’তে ঢালাও সরকারবিরোধী সমালোচনা করা হয়, যেখানে তাদের কেউ কণ্ঠ রোধ করে না। কিন্তু তারপরেও সব কথা শেষে তারা এটাও বলে যে, তাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রী এই শ্রেণির লোকজনের দেশ পরিচালনার খায়েস থাকলে তাদের ভোটের মাঠে নেমে, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসারও আহবান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেগা প্রজেক্ট জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে। আমরা আমাদের ৯০ ভাগ উন্নয়ন প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের সক্ষমতা অর্জন করেছি। অতীতে বাংলাদেশকে যে ভিক্ষুকের জাতি বানিয়ে রাখা হয়েছিল, সেখান থেকে বাংলাদেশ আজ মর্যাদা নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা বাংলাদেশের মানুষকে কিছু দিতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজ বিএনপি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে কিন্তু তাদের নির্বাচনের ইতিহাস এতোটা কলুষিত যে তাদের এই নিয়ে কথা বলার কোনো অধিকারই নেই। কোনো মুখে তারা বলে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা-১০ এ ফালু (মোসাদ্দেক আলী ফালু) ইলেকশন করেছিল। যে ইলেকশনের চিত্র সবার নিশ্চয়ই মনে আছে। মাগুরা ইলেকশন হয়, যে ইলেকশন নিয়েই আন্দোলন করে আমরা খালেদা জিয়া উৎখাত করেছি। মিরপুর ইলেকশন, প্রত্যেকটা নির্বাচনের চিত্রই আমরা দেখেছি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘১৯৭৭ সালের ‘হ্যাঁ-না’ ভোট, ’৭৮ এর রাষ্ট্রপতি এবং ’৭৯ এর সাধারণ নির্বাচন, ’৮১ এর নির্বাচ’ন প্রত্যেকটা নির্বাচনই আমাদের দেখা। পাশাপাশি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনেরও কথাও উল্লেখ করেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নির্বাচন ব্যবস্থার যে উন্নয়ন সেগুলো আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত এবং চিন্তা চেতনার বাস্তবায়ন। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন ব্যবস্থার আধুনিক ও যুগোপযোগীকরণে ছবিসহ ভোটার তালিকা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এবং ইভিএম ব্যবস্থা বলবৎ করা উল্লেখ করেন তিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সবের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার আবার জনগণের কাছেই ফিরিয়ে দিয়েছে। ‘
গণভবন থেকে আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুস্থদের মধ্যে সেলাই মেশিন ও অন্যান্য সহায়তা বিতরণ করেন।

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১