দণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্যর বিষয়ে ‘কিছুই জানে না’ সংসদ সচিবালয়


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় : মে ২৩, ২০২২, ৮:১৬ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
দণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্যর বিষয়ে ‘কিছুই জানে না’ সংসদ সচিবালয়

দুর্নীতি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের রায়ের বিষয়ে ‘কিছুই জানে না’ সংসদ সচিবালয়। আপিল বিভাগের রায়ের ওপর ঝুলছে তার সংসদ সদস্য পদ।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন না। আর সংবিধানের ‘স্পিরিট’ হলো, কেউ যে কারণে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হন না, একই কারণে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েও স্বপদে থাকতে পারেন না।

বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে. এম. আব্দুস সালাম সময়ের খবর বলেন, আমরা অফিসিয়ালি এখনো এ বিষয়ে কিছু জানি না। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের কোনো ব্যাপার আসে না। আপিল আবেদনের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের স্থগিত আবেদন করা হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ হাজী সেলিমের আইনজীবী ব্যারিস্টার সাঈদ আহমেদ রাজা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওনার যে রায়টা হয়েছে সে রায়টা এখনো চূড়ান্ত নয়। সেই রায় নিয়ে আপিল চলছে। আমাদের আপিলটাও প্রক্রিয়াধীন। কোনো রায় চূড়ান্ত না হলে তার এফেক্ট কি মানুষের ওপর দেওয়া যাবে? আপনি যখন এফেক্ট দেবেন তখন অবশ্যই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চূড়ান্ত হওয়ার আগে এইটা এফেক্ট হতে পারে না।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বার বার বলে এসেছি সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২ উপধারার ঘ অনুযায়ী উনি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন না। হাইকোর্ট বিভাগের অনেকগুলো আদেশ আছে, দণ্ডমূলক সাজা কখনো স্থগিত হয় না, জরিমানা স্থগিত হয়। উনি যদি বেকসুর খালাস না পান আপিল বিভাগ থেকে, ওনার সংসদ সদস্য পদ বাতিল থাকবে। এখন স্পিকার ঘোষণা দিলেন কি না সেটা সংসদের ব্যাপার, সংসদ সচিবালয়ের ব্যাপার।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এ বিষয়ে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আপিল আবেদনের চূড়ান্ত রায় না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্ট বিভাগের আদেশের স্থগিত আবেদন করা হয়। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন। যদিও দণ্ডিত হওয়ার পরপর সংসদ সদস্য পদ বাতিলের ঘটনা বাংলাদেশে আছে। কুয়েতের আদালতে দণ্ডিত লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে জাতীয় সংসদ। অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে পাপুলকে চার বছরের কারাদণ্ড দেন কুয়েতের একটি আদালত। সেদিন থেকেই তার সংসদ সদস্য পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।

দুদকের করা অবৈধ সম্পদ অর্জনের যে মামলায় হাজী সেলিমের সাজা হয়েছে, সেটি দায়ের করা হয়েছিল ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর। পরের বছর ২৭ এপ্রিল বিশেষ আদালত তাকে দুই ধারায় মোট ১৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।

আমরা বার বার বলে এসেছি সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদের ২ উপধারার ঘ অনুযায়ী উনি সংসদ সদস্য পদে থাকতে পারেন না। হাইকোর্ট বিভাগের অনেকগুলো আদেশ আছে, দণ্ডমূলক সাজা কখনো স্থগিত হয় না, জরিমানা স্থগিত হয়। উনি যদি বেকসুর খালাস না পান আপিল বিভাগ থেকে, ওনার সংসদ সদস্য পদ বাতিল থাকবে। এখন স্পিকার ঘোষণা দিলেন কি না সেটা সংসদের ব্যাপার, সংসদ সচিবালয়ের ব্যাপার।

দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান, হাজী সেলিম ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি উচ্চ আদালত তার সাজা বাতিল করে রায় দেন। দুদক তখন সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করলে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

সেই শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্ট একটি ধারায় হাজী সেলিমের ১০ বছরের সাজা বহাল রাখেন এবং অন্য ধারায় ৩ বছরের সাজা থেকে তাকে অব্যাহতি দেন।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১