দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার প্রধান ২ আসামীকে বাদ দিয়ে গোপনে চার্জশিট


এম.এ হান্নান, বাউফল: প্রকাশের সময় : অক্টোবর ৩০, ২০২২, ২:২৬ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
দুই যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার প্রধান ২ আসামীকে বাদ দিয়ে গোপনে চার্জশিট

 

পটুয়াখালীর বাউফলে আলোচিত দুই যুবলীগ হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামীসহ ৩২জনকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিআইবি)।

গত বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতের বিচারক মো. জামাল হোসেনের আদালতে ওই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়। বাদীর বক্তব্য না নিয়ে যথাযথ তদন্ত ছাড়াই গোপনে চার্জশিট দাখিলের অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

 

নিহতদের পরিবার, স্থানীয় সূত্র ও মামলার বাদী পক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, কেশবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন লাভলু ও বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকুর মধ্যে রাজনৈতিক বিরোধ ছিল। গত ২০২০ সালের ২রা আগস্ট ওই বিরোধের জেরেই মহিউদ্দিন লাভলুর অনুসারীরা সালেহ উদ্দিন পিকুর দুই ভাই যুবলীগ নেতা রকিব উদ্দিন রুমন ও সদস্য ইশাদ তালুকদারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।

এ ঘটনায় মহিউদ্দিন লাভলুকে প্রধান আসামীকে ৫৯জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মফিজ উদ্দিন মিন্টু। বাদী হয়ে ৫৯জনকে আসামী করে বাউফল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বগা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মহিবুল্লাহ মামলা তদন্ত শুরু করেন। তাঁর বদলিজনিত কারনে তদন্ত দায়িত্ব পান পরবর্তী ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম। তদন্ত কর্মকর্তা সিরাজুল প্রধান আসামীর নাম বাদ দিতে বাদী পক্ষের কাছে প্রস্তাব দেন এমন অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করেন বাদী। পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান পটুয়াখালী জেলা পিআইবির পুলিশ পরির্দর্শক মো. লোকমান হোসেন। দীর্ঘ দিন পরে মামলার প্রধান দুই আসামী মহিউদ্দিন লাভলু ও ফারুক তালুকদারসহ ৩২জনের নাম বাদ দিয়ে ৩২জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় তদন্ত কর্মকর্তা।

 

এছাড়াও হত্যার ঘটনার দুই দিন আগে (৩১জুলাই,২০২০) মহিউদ্দিন লাভলুর অনুসারী রফিক ও রাসেলের নেতৃত্বে সালেহ উদ্দিন পিকুসহ যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এঘটনাও দুই মামলা হয়েছে।

মামলার বাদি মফিজ উদ্দিন মিন্টু স্বদেশ প্রতিদিনকে বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলার প্রধান আসামী মহিউদ্দিন লাভলু ও ফারুক তালুকদারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার দুই ভাই হত্যার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনায় ছিলেন মহিউদ্দিন লাভলু। আর ঘটনার সময় সশরিরে উপস্থিত ছিলেন ফারুক তালুকদার। অথচ তাঁদের নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হলো। আমি এ চার্জশিট মানি না।

 

তিনি আরও বলেন,‘ প্রধান দুই আসামীর দুই ভাই অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের কর্মকর্তা ছিলেন। তাতাঁদের তদবিরেই তদন্তকারী কর্মকর্তা দুই প্রধান আসামীকে বাদ দিয়ে গোপনে চার্জশিট দিয়েছেন।

মামলার বাদীর আইনজীবী অ্যাড. কমল দত্ত বলেন,‘ উদ্দেশ্যমূলক এ চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

এবিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. লোকমান হোসেন বলেন,‘ যথাযথ তদন্ত শেষেই অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। বাদী পক্ষের কোনো অভিযোগ থাকলে আদালতে জানাতে পারেন।’


আর্কাইভ