২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পটুয়াখালীতে দেশীয় মাছ বিলুপ্তির পথে

সুনান বিন মাহাবুব, পটুয়াখালী , প্রকাশিত হয়েছে-

 

 

পটুয়াখালীতে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের ফলে খাল, জলাশয়, পুকুর ভরাট ও দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ কমতে শুরু করেছে। এছাড়াও ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার ও কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তর পথে।

জানা গেছে, পটুয়াখালী জেলার মধ্যে কলাপাড়া উপজেলায় সাগরপাড়ে হওয়ায় হাইব্রিড প্রজাতির তেলাপিয়া. রুই-কাতলা, ব্রিগেড, পাঙ্গাশ মাছের মাছ চাষ বেশি হয়। অসংখ্য নদী-নালা, খাল-বিল পুকুর জলাশয় রয়েছে এই অঞ্চলে। কিন্তু দেশি প্রজাতির শিং, কৈ, মাগুর, টাকি, শোল, বোয়াল মাছের চাষ হয়না। কারন বক্তিগত পুকুরগুলো অধিকাংশ ভরাট করে স্থাপনা তৈরি করছে জমির মালিকরা। অভ্যন্তরীন খালের শাখা প্রশাখাসহ মূল খাল পর্যন্ত ভরাট হয়ে গেছে। শুকনো মৌসুমে পানি না থাকায় মা মাছ মারা যাচ্ছে। ফলে দ্রæত কমে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছের উৎপাদন। কৃত্তিমভাবে কার্প জাতীয় মাছের উৎপাদন বাড়াতে পুকুরে প্রয়োগ করা হয় কীটনাশক, সার। ধানক্ষেতেও মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও সার প্রয়োগ করা হয়। এতেও দেশীয় প্রজাতির মাছ মারা যাচ্ছে নির্বিচারে।

পটুয়াখালী জেলা মৎস কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, পটুয়াখালীতে মাছের অন্যতম অভয়াশ্রম লোহালিয়া, তেঁতুলিয়া আন্দারমানিক, রামনাবাঁধ নদী। দেশে আহরিত শতকরা ৭৩ ভাগ মাছ মিঠা পানির। কিন্তু এখন আর বাজারে দেশি প্রজাতির মাছের দেখা পাওয়া যায়না। হাইব্রিড মাছে বাজার সয়লাব হওয়ায় দেশীয় প্রজাতির মাছ এখন বিলুপ্তির পথে। জলাশয় খাল, পুকুর ভরাটের কারনে মাছের আবাসস্থল কমেছে। সবাই সেচ দিয়ে মাছ ধরে। কোনো দেশীয় মাছ অভয়াশ্রম এলাকায় থাকতে পারছে না। এটা আইনত নিষিদ্ধ।

স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা জানিয়েছেন, বর্তমানে জেলায় হাইব্রিড জাতের সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প, মিরর কার্প, বিগহেড মাছ চাষ হচ্ছে। এই মাছ চাষের আগে পুকুর ডোবার পানি সেচ দেয়া হয়। ফলে মারা যায় দেশি প্রজাতির সকল মাছ। মৎস্যজীবীরা অধিক লাভের আশায় হাইব্রিড মাছের চাষ করছে। আর ধ্বংস হচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ। দেশী প্রজাতির কৈ, মাগুর, শিং, পাবদা, টাকি, রুই, কাতল, মৃগেল, চিতল, রিটা, গুজি, আইড়, পাঙ্গাস, বোয়াল, ট্যাংরা, বোয়াল, খৈলসাসহ সব হারিয়ে যাচ্ছে। আগে বর্ষা মওসুমে দেশীয় মাছ ধরার উৎসব ছিল। এখন এসব চোখে পড়ে না। দেশি মাছ সংরক্ষনের জন্য কারেন্ট জালের ব্যবহার বন্ধ করা উচিৎ বলে তারা মনে করেন।