২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ || ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ || ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি

পিত্রালয় থেকে নেশার টাকা এনে না দেওয়ায় স্ত্রীকে নির্যাতন, হাসপাতালে ভর্তি

হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি , প্রকাশিত হয়েছে-

বরগুনার আমতলীতে পিত্রালয় থেকে নেশা করার জন্য ২০ হাজার টাকা এনে না দেওয়ায় সীমা বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে স্বামী সবুজ ফকিরের বিরুদ্ধে। 

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে আমতলী সদর ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী গ্রামে। আহত গৃহবধূকে পুলিশ উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

আহত গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের হলদিয়া গ্রামের সোনা মিয়া আকনের মেয়ে সীমা বেগমের সাথে আমতলী সদর ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী গ্রামের হামেদ ফকিরের ছেলে সবুজ ফকিরের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের বাবা সোনা মিয়া আকন মেয়ের সুখের কথা ভেবে সংসারের যাবতীয় মালামাল, কানের ঝুমকা, স্বর্নের রিং ও নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে দেন। শ্বশুর বাড়ি থেকে নগদ পাওয়া ২০ হাজার টাকা নেশা করেই শেষ করে দেন সবুজ ফকির। এরপরও প্রায়ই নেশার জন্য স্ত্রী সীমা বেগমকে বাবার বাড়ী থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য শারিরীক নির্যাতন করতেন।

বুধবার সন্ধ্যায় স্বামী সবুজ স্ত্রী সীমাকে বাবার বাড়ী থেকে নেশার জন্য ২০ হাজার টাকা এনে দিতে বলেন। স্ত্রী সীমা বেগম বাবার বাড়ী থেকে ওই টাকা এনে দিতে রাজী না হওয়ায় ঘরে আটকে গাছের ডাল (লাঠি) দিয়ে পিটিয়ে এবং তলপেটে লাথি মারলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যান। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে ফের তাকে ধার্যকৃত টাকার জন্য মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে স্বজনদের মাধ্যমে পুলিশ সংবাদ পেয়ে সবুজের বাড়ী থেকে তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করেন।

আহত গৃহবধূ সীমা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই দেখে আসছি আমার স্বামী সবুজ ফকির নেশাখোর। নেশার টাকার জন্য মোরে ব্যামালা মাইর ধইর করে। এরমধ্যে মোর একটা পোলা হয়। হেইয়ার মুহের দিকে তাহাইয়া এতদিন চুপ কইর‌্যা রইছি। কাইল ও আইজ ২০ হাজার টাহার লইগ্যা মোরে ব্যামালা মাইর ধইর হরছে। মুই এইয়ার বিচার চাই।

অভিযুক্ত স্বামী সবুজ ফকির স্ত্রী সীমা বেগমকে মারধর এবং নেশার জন্য টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করেন।

আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মেহেরিন আশ্রাফ ঐশী বলেন, সীমার তলপেট এবং হাতে পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান বলেন, নির্যাতনের খবর পেয়ে আহত গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

SK24/SMK/DESK