ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে তরমুজ ক্ষেত, কোটি কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা


হায়াতুজ্জামান মিরাজ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। প্রকাশের সময় : মার্চ ২২, ২০২৩, ১০:৫৭ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
ভারী বর্ষণে তলিয়ে গেছে তরমুজ ক্ষেত, কোটি কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা

 

বরগুনার আমতলীতে গত চাঁর দিনের ভারী বর্ষণ ও কিছু এলাকায় শিলা বৃষ্টির কারনে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার অধিকাংশ তরমুজ চাষীরা। রোপনকৃত তরমুজ গাছ ও ফলন পঁচে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগী কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলায় এ বছর ৬ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুনেরও বেশী। তরমুজ চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। কিছু কিছু চাষী আগাম তরমুজের চাষ করায় সেই ক্ষেতের তরমুজ বাজারে বিক্রিও করেছেন। আর অধিকাংশ চাষীর ফলনকৃত তরমুজ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেটে তা বিক্রি করার উপযোগী হওয়ার কথা। কিন্তু গত চার দিনের ভারী বর্ষণে তরমুজ চাষিরা মহাবিপাকে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে তাদের তরমুজ ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি আরো দুই একদিন স্থায়ীত্ব হলে সর্বশান্ত হয়ে যাবে কৃষক ও তরমুজ চাষীরা। এতে চাষীরা অন্তত কয়েকশত কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন বলে জানিয়েছেন।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি তরমুজ ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে তরমুজ ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। অনেক ক্ষেতে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। অনেক এলাকায় বৃষ্টির সাথে শিলা পড়ার কারনে তরমুজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক স্থানে চাষীরা তাদের ক্ষেতে জমে থাকা পানি নিস্কাশনের কাজ করছেন।

উপজেলার হলদিয়ার টেপুরা গ্রামের কৃষক মোঃ আবু সালেহ বলেন, চলতি মৌসুমে তরমুজ চাষ করে ফলনও ভালো হয়েছে। হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও শিলা বৃষ্টির কারনে পানিতে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ওই কারনে বেশ দুশ্চিন্তায় আছি। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ভূক্তভোগী তরমুজ চাষীদের পথে বসে যেতে হবে এবং কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আঠারোগাছিয়ার তরমুজ চাষী মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও শিলা বৃষ্টির কারনে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গতকাল রাতে সেচ দিয়ে ক্ষেতের পানি নিস্কাশন করেছি। আজ দুপুরে আবার বৃষ্টি হয়ে অতিরিক্ত পানি জমে আছে তরমুজ ক্ষেতে। এতে গাছ ও তরমুজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিভিন্ন মাধ্যমে সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছি।

এদিকে খেপুপাড়া আবহাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানায়, অফিসের মেঘের মানচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে উপকূলীয় বিভিন্ন অঞ্চলে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত আর ঝড় বাতাসের প্রভাব থাকতে পারে। তবে দ্রæত আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। নিম্নচাপের প্রভাবে চলমান এই বৃষ্টিপাত থাকতে পারে আরো কয়েক দিন।

আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে দ্বিগুণেরও বেশী জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু চার দিনের অব্যাহত মুষলধারে ভারী বর্ষণ ও শিলা বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেতে পানি জমে থাকায় কৃষকরা আতংকে রয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা মাঠে থেকে কাজ করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের চেষ্টা করছেন।

তবে দ্রুত ক্ষেত থেকে পানি নিস্কাশনের জন্য চাষীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় গাছ ও ফল দুটোই পঁচে নষ্ট হয়ে যাবে।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১