স্বাধীনতা দিবসে ফুল দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হট্টগোল


কুবি প্রতিনিধি: প্রকাশের সময় : মার্চ ২৭, ২০২৩, ৯:৫৭ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
স্বাধীনতা দিবসে ফুল দেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হট্টগোল

 

স্বাধীনতা দিবসে শ্রদ্ধা জানানোকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মাঝে ধাক্কাধাক্কি ও কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটেছে।২৬ মার্চ রবিবার বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে সকাল সাড়ে ১১ টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপাচার্যের সামনেই এই ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা। এসময় সদ্য সাবেক সভাপতি ইলিয়াসের অনুসারী বিভিন্ন হলের নেতাদের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এরপর ছাত্রলীগের আরেকটি পক্ষ সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহি ও সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস তাদের অনুসারীদের নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান। এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন জানান সদ্য বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম। এসময় দুই পক্ষের মাঝে তর্ক বেধে যায়।

ইলিয়াসের অনুসারীরা রেজা-স্বজনের গ্রুপের দিকে তেড়ে গেলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন।

এসময় উপাচার্য বলেন, আমি চাই না ছাত্রলীগের কারণে স্বাধীনতা দিবসের এই প্রোগ্রাম নষ্ট হোক। তোমাদের মাঝে যে ঝামেলা করবে আমি তাকেই বহিষ্কার করবো।

এ ঘটনায় ইলিয়াসের অনুসারী কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ অন্য গ্রুপের নেতাকর্মীদের ‘হাত-পা’ কেটে ফেলার হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠে।

তবে বিষয়টা অস্বীকার করে নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, এসব মিথ্যা-বানোয়াট। কেউ প্রমাণ দিতে পারলে আমি স্বীকার করে নিব।

সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত মো. সায়েম বলেন, আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ সবসময় সুষ্ঠু থাকুক, শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকুক। আমরা ফুল দেওয়া শেষে যখন নামতেছিলাম তখন স্বজন বরণ বিশ্বাস ভাই অকথ্য ভাষায় আমাকে ধমক দিয়ে কথা বললো। তিনি (স্বজন) বলতেছে যে, তুই এখান থেকে নামতেছস না কেন। আমি বলছি, আমি তো নামতেছি। আমি নামার তো সময় দিবেন আপনি।এর মধ্যে সে শাউটিং শুরু করে দিছে তারপর আমাদের পোলাপান একটু চিল্লাচিল্লি করছে এতটুকুই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিয়াসের অনুসারী সদ্য বিলুপ্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন মাসুম বলেন, আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাচ থেকে সাত বছর রাজনীতি করেছি আমরা শাখা ছাত্রলীগের হয়ে ফুল দিচ্ছিলাম তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক ছাত্র বর্তমানে ইভেনিং কোর্সে ভর্তি হয়েছে সে আমাদের নেমে যাওয়ার জন্য থ্রেট দিচ্ছিলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রানিং শিক্ষার্থীরা আবার ইভেনিং এর শিক্ষার্থীদের শাখা ছাত্রলীগের সাথে কাজ করার কোন এখতিয়ার নাই। আমাদের থ্রেট দেয়ার কারনে আমরা শুধু এটার প্রতিহত করার চেষ্টা করেছি। আর রানিং শিক্ষার্থীরা যদি ফুল দিতে যায় তাহলে তারা ফুল দিবে সেক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই।

সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস বলেন, তারা (ইলিয়াসের অনুসারী) শ্রদ্ধা জানানোর পর আমরা জানাতে গেলে তারা বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছে। নোংরা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। অথচ আমরা সম্পূর্ণ নমনীয়তা বজায় রেখেছি। কারা বিশৃঙ্খলা করেছে এটা ভিডিও আছে সবার কাছেই।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী রেজা-ই-এলাহী বলেন, আমরা ফুল দিতে গিয়েছিলাম তখন সাবেক সভাপতি ইলিয়াস ভাইয়ের মদদপুষ্ট একটি পক্ষ আমাদের সাথে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা। তবে বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে আমরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেছি।

দিবস উদযাপন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আহসান উল্ল্যাহ বলেন, দুই পক্ষ কমিটিতে আসতে চায়, স্বাভাবিকভাবেই কার উপর কে ডমিন্যান্ট করবে তা নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। তবে এ ধরনের একটা প্রোগ্রামে তাদের বিভাজনের মাধ্যমে এমন ঘটনা না হলে ভাল হতো।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১