দশমিনায় হলুদে হলুদে রাঙ্গানো কৃষকের মাঠ

সূর্যমূখী চাষে কৃষকের দ্ধিগুন লাভের স্বপ্ন


মোঃ বেল্লাল হোসেন, দশমিনা প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১, ২০২৩, ৮:২৮ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
সূর্যমূখী চাষে কৃষকের দ্ধিগুন লাভের স্বপ্ন

 

পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায় কৃষকের মাঠ হলুদে হলুদে রাঙ্গানো। ঝৃতু রাজ বসন্তে উপজেলায় কৃষকের মাঠ হলুদে হলুদে সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে দর্শনার্থীদের। রমজানের শেষ বিকেলে ক্লান্তির সন্দিক্ষনে মনকে একটু প্রশান্তি দিতে দর্শনার্থীদের ভির দেখা যায় কৃষকদের সূর্যমূখী ক্ষেতে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে, তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি ও রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ১০০ একর জমিতে সূর্যমূখীর চাষে বীজ, সার, আর্থিক প্রনোদান, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা সহ বিভিন্ন রকম সহয়তা দিয়ে কৃষকদের সহায়তা করা হয়েছে। দশমিনা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফয়সাল আহমেদ বলেন, সরকার ভোজ্য তেল সংকট নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্লান্টের মাধ্যমে সূর্যমূখী চাষে কৃষকদের ব্যাপক সহায়তা করছেন এতে কৃষকরাও সূর্যমূখী চাষে ঝুকে পরছেন। দশমিনায় বারি-০৩ জাতের সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। উপজেলায় রবিশষ্য আবাদের সঙ্গে প্রতিটি গ্রামেই যুক্ত হয়েছে সূর্যমুখী চাষ।

সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কৃষকের মাঠ হলুদ ফুল অপরুপ দৃশ্যের অবতারণা করেছে। সবুজ পাতার ভিতর থেকে বড় বড় হলুদ ফুলগুলো দাড়িয়ে প্রকৃতিকে নিজের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে। কৃষকের সূর্যমূখী চাষের ছবি দর্শনার্থীদের ক্যামেরায় বিভিন্ন ভাবে ধারন করা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দর্শনার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ দল বেঁধে সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ছুটছে ফুলের মাঠ দেখতে। দর্শনার্থী গন ক্ষেতের মাঝে ডুকে ছবি তোলায় কিছুটা বিড়ন্বনায় পড়তে হচ্ছে কৃষককে।

উপজেলার বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের বাংলা বাজার গ্রামের স্বর্ন পদক প্রাপ্ত কৃষক কাজী আনিচুর রহমান সাথে কথা হয় তিনি বলেন সূর্যমূখী একটি লাভ জনক ফসল। নিজেদের চাহিদা পূরন করে বিভিন্ন উপজেলা ও বিভাগীয় শহরে বাজার জাত করা যায়। আমার ক্ষেতের বীজ বিক্রি করতে কোথাও যেতে হয়না পাইকারগন এসে নিয়ে যায়। আমি সহ ১০ জন এ বছর ৩০ একর জমিতে সূর্যমূখীর চাষ করেছি । সেচ ও লেভার মজুরি সহ প্রতি একরে খরচ হবে ১৫-২০ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সার, বীজ ও নগদ অর্থ সহায়তা করেছে। প্রতিদিন কৃষি অফিস থেকে কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা এসে খোজ খবর নেন এবং ক্ষেত ঘুরে দেখেন। গাছের চাড়া বেশ ভালো প্রতিটি সূর্যমূখীতে ১-২কেজি ওজন হবে । এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আমরা আশা করছি প্রতি একর জমিতে ১ টন বীজ পাবো যা বাজার দর ৬০-৭০ হাজার টাকা। এতে করে তৈল,গো-খাদ্য হিসাবে খৈল উৎপাদিত হবে। সকাল , দুপুর ও বিকেলে লোকদের ভির সামলাতে হয়। কেহ আসে ছবি তোলার জন্য কেহ আবার ফুল ছিড়ে নেয়, আবার কেহ গাছ ভেঙ্গে ফেলে।

বহরমপুর ইউনিয়নের রমজান বলেন উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে আমি সল্প পরিসরে এ বছর ১০ একর জমিতে সূর্যমূখী চাষ করছি। কৃষি অফিস থেকে সার, বীজ ও নগদ কিছু অনুদান দিয়েছে। প্রতি একরে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হবে। গাছের চারার সূর্যমূখী দেখতে ভালো প্রতিটি ফলে ১ থেকে দেড় কেজি বীজ পাবো তাতে আমার ১০ একর জমিতে খরচের তুলনায় দ্ধিগুন লাভ হবে।

শুক্রবার(৩১ মার্চ) দর্শনার্থী হিসাবে দেখা হয় কালাম কাজীর সূর্যমূখী ক্ষেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) ও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের কথা হয় নির্বাহী কর্মকর্তা নাফিসা নাজ নীরা এর সাথে তিন বলেন উপজেলায় এমন উদ্যোগকে আমি মনে প্রানে অভিবাদন জানাই। ক্ষেতে এসে হলুদের সমারহ দেখে মনটা আনন্দে ভরে গেলো। আগামীতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে সূর্যমূখী চাষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং কৃষককে সূর্যমূখী চাষে উদ্ধুদ্দ করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাফর আহমেদ আজকের পত্রিকা প্রতিনিেিক বলেন গত বছরের তুলনায় এ বছর কৃষক দ্ধিগুন জমি সূর্যমূখী চাষে ব্যবহার করেন। গত বছর উপজেলায় ১৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমূখী চাষ হয় এ বছর দলগত ও একক ভাবে ৪২ হেক্টর জমিতে কৃষক সূর্যমূখী চাষ করেছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওয়াতায় সূর্যমূখী চাষে কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও নগদ অর্থ অনুদান দেয়া হয়। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা ও ফিল্ডসুপারভাইজার গন সার্বোক্ষনিক কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিচ্ছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে আছে সূর্যমূখী চাষে কৃষক বাম্পার ফলন পাবে বেশি পরিমান লাভ করবে ।


আর্কাইভ