Print This Post
পটুয়াখালীর বাউফলে মো. আরিফুজ্জামান ওরফে রিয়াদ খান নামে এক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অন্যের বউ বাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আদালতে মামলা করেন গৃহবধূর স্বামী। ওই মামলার সূত্র ধরে সংবাদ প্রকাশ করায় চার সাংবাদিকের নামে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন যুবলীগ নেতা।
গতকাল (বুধবার) বরিশাল সাইবার ট্র্যাইব্যুনাল আদালতে চারজনকে আসামী করে মামলা করেন আরিফুজ্জামান ওরফে রিয়াদ খান(৪৩)। তিনি বাউফল পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
মামলার আসামিরা হলেন- কালবেলার বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি জি.এম মশিউর রহমান মিলন, সময় টিভির নিজস্ব প্রতিনিধি মো. মনির হোসেন, দৈনিক ভোরের আকাশের বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি মো. ফিরোজ ও বাউফল প্রতিনিধি ডটকমের সম্পাদক এনামুল হক এনা। আদালত বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েনকে মামলার তদন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন।
এর আগে পরকীয়ার জেরে এক গৃহবধূকে নিয়ে পালানোর অভিযোগে আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী আদালতে মামলা হয়। ২৬ জুন ওই গৃহবধূর স্বামী মাইনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওই মামলার সূত্র ধরে সংবাদ করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারা।
যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে বউ ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলার বাদী মো. মাইনুল ইসলাম বলেন,‘ যুবলীগ নেতা রিয়াদ খান বিভিন্ন অপকৌশলে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিষয়টি তাঁর শশুর-শাশুড়িসহ এলাকার সবাই জানে। সর্বশেষ গত ১৩ জুন ভোর রাতে তার স্ত্রীকে নিয়ে আরিফুজ্জামান পালিয়ে যান।
গৃহবধূর বাবা বলেন,‘ আরিফুজ্জামান তার পরিবারটিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। এ রকম আরও একাধিক সংসার ভেঙেছেন। যার সবাই জানে।
বাউফল রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে সেই সূত্র ধরে এবং ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সেই ঘটনায় সাংবাদিকদের বিররুদ্ধে সাইবার আইনে মামলা এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি এই হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
বাউফল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অতুল চন্দ্র পাল মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকদের হয়রানি করার জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই মামলা করা হয়েছে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না করা হলে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকরা মাঠে নামবেন।
এবিষয়ে যুবলীগ নেতা আরিফুজ্জামান খান রিয়াদ মুঠোফোনে বলেন, মিথ্যা তথ্য দিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তাঁর বিররুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এ কারণে তিনি সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছেন। তাঁরাতো (সাংবাদিক) মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সংবাদ প্রকাশ করেছেন। তাহলে মিথ্যা তথ্য হল কিভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই মামলাও মিথ্যা। পারিবারিক কলহের জেরে তাঁর (রিয়াদ) বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে হয়রানি করা হচ্ছে। তিনি কোনো নারীকে ভাগিয়ে নেননি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, ওই নারীর স্বামীর আদালতে দায়ের করা মামলার কপি গতকাল (বুধবার) পেয়েছেন। সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে চার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার খবর শুনেছেন। তবে তাঁর কাছে এখনও ওই মামলার কপি এসে পৌঁছায়নি। তিনি আরও বলেন, এতটুকু বলতে পারি মামলা দিয়ে কাউকে হয়রানি করার কোনো সুযোগ নাই। দুটি মামলাই অধিকতর গুররুত্বসহকারে তদন্ত করে সঠিক প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :