মিশন শেষ

দক্ষিণ গাজা থেকে ‘সৈন্য প্রত্যাহার’ করছে ইসরায়েল


আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশের সময় : এপ্রিল ৭, ২০২৪, ১০:১৫ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
দক্ষিণ গাজা থেকে ‘সৈন্য প্রত্যাহার’ করছে ইসরায়েল

 

খান ইউনিসসহ দক্ষিণ গাজা উপত্যকা থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের দাবি করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রোববার (৭ এপ্রিল) আইডিএফের একজন মুখপাত্র জানান, মাত্র একটি ব্রিগেড রেখে বাকি সব সৈন্যই প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রোববার এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ‘৯৮তম কমান্ডো ডিভিশন খান ইউনিসে তাদের মিশন শেষ করেছে। তারা ভবিষ্যতের অভিযানের জন্য প্রস্তুত হতে গাজা উপত্যকা ত্যাগ করেছে। ১৬২তম ডিভিশন এবং নাহাল ব্রিগেডের নেতৃত্বে একটি বিশেষ বাহিনী গাজা উপত্যকায় কাজ করে চলেছে এবং আইডিএফের (ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) কর্মের স্বাধীনতা ও সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দাভিত্তিক অভিযান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে।’

এদিকে মিসরের রাজধানী কায়রোতে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আজ আলোচনা শুরু হয়েছে। সেখানে কাতারের প্রধানমন্ত্রী এবং মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রধান উপস্থিত রয়েছেন। হামাস আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা আগেই নিশ্চিত করেছে। তবে ইসরায়েলের কোনো প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন কি না—সেটি এখনো নিশ্চিত নয়।

দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে স্থল অভিযানের যে হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, সেনা প্রত্যাহারের ফলে সেই পরিকল্পনার কী হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। নেতানিয়াহু বলেছিলেন, হামাসকে নির্মূল করতে রাফাহে স্থল অভিযান চালানো প্রয়োজন।

এ বছরের শুরু থেকে গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে সৈন্য প্রত্যাহার করছে ইসরায়েল। তবে সৈন্য প্রত্যাহারের কারণ বা সরিয়ে নেওয়া সৈন্যদের সংখ্যা এখনো জানায়নি আইডিএফ। অপর দিকে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি-সংক্রান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে আবারও আলোচনার আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে মিসর। এই আলোচনায় ইসরায়েল এবং হামাস উভয়ই অংশ নেবে বলে জানিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নত হয়ে হামাসের সব দাবি মেনে নেবে না ইসরায়েল। তিনি বলেন, ‘হামাস চেয়েছিল, আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তাদের সব দাবিই মেনে নেবে ইসরায়েল। কিন্তু তা হবে না।’

তবে হামাসের হাতে জিম্মি ১৩০ জন ইসরায়েলির মুক্তির জন্য সমঝোতায় পৌঁছাতে ইসরায়েল প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান তিনি। রোববারের মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে তিনি বলেন, জিম্মিদের মুক্তি ছাড়া কোনো যুদ্ধবিরতি হবে না।

এদিকে গাজায় বেসামরিক নাগরিক হত্যা বন্ধ করতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দেশ ও দেশের বাইরে রয়েছেন ব্যাপক চাপের মুখে। সবচেয়ে বড় মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নেতানিয়াহুকে আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছেন, গাজার বেসামরিক নাগরিক ও ত্রাণ সহায়তাকর্মীদের হত্যা বন্ধ না হলে হামাসবিরোধী লড়াইয়ে ইসরায়েলকে আর সহায়তা দেবে না তার দেশ।

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিন ব্রিটিশ নাগরিকসহ সাতজন ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে রাজনৈতিক চাপের সম্মুখীন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। গতকাল বুধবার তিন বিরোধী দল এবং শাসক কনজারভেটিভ পার্টির কয়েকজন এমপি বলেছেন, ব্রিটিশ সরকারের অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সাবেক তিনজন বিচারপতি। ১৭ পৃষ্ঠার ওই চিঠিতে সই করেছেন ৬০০ জনের বেশি আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ বিচারপতি। চিঠিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি করলে যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ আসতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের আক্রমণ কয়েক মাস ধরেই গাজা উপত্যকার দক্ষিণে জোরালো হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে— ইসরায়েলি আক্রমণে এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া মিসর সীমান্তের কাছে অবস্থিত রাফাহ প্রায় ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনিদের জন্য শেষ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে। সূত্র: রয়টার্স ও আল-জাজিরা


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০