কৃষকের হাসি: বেগুনের চড়া দামে


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় : এপ্রিল ১০, ২০২২, ৯:৪০ অপরাহ্ণ / Print This Post Print This Post
কৃষকের হাসি: বেগুনের চড়া দামে

 

রমজান উপলক্ষে নরসিংদীতে বেগুনের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। অপরদিকে দ্বিগুণ দরে সাধারণ নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায় বেগুন। তবুও ইফতারে বেগুনি খেতে নিরুপায় হয়ে চড়া দামেই বেগুন কিনছেন কিছু ক্রেতা।

এদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলেছেন, ইফতারে বেগুন দিয়ে বেগুনী তৈরির ফলে এ মাসে চাহিদাটা অন্যান্য সময়ের থেকে একটু বেশি। জাত ও আকার ভেদে পাইকারি বাজার থেকে বেগুন পৃথকভাবে বেশি মূল্যে কিনে খুচরা বাজারে তারা বিক্রি করছেন।

তবে পাইকারি ক্রেতাদের দাবি, রমজানের আগে যে বেগুনের পাইকারি মণ ছিল সাত শ’ টাকা; সেটা বর্তমানে চাহিদা বাড়ায় কৃষকদের কাছ থেকে ১৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পরিবহন ও বিভিন্ন খাতে খরচ করে অন্যত্রে পাঠিয়ে কোনোমতে পুঁজি পাচ্ছেন বলে জানান তারা।

জানা গেছে, দেশের বৃহত্তম সবজি উৎপাদন এলাকা হিসেবে পরিচিত নরসিংদী। এ জেলার ছয়টি উপজেলার সব জায়গায় কম-বেশি আবাদ করা হয় বিভিন্ন রকম সবজি। আর এখানকার সবজি আবাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে শত শত কৃষক। তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি হয় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে গড়ে উঠা সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার বারৈচা, নারায়ণপুর, জংলি শিবপুর, মরজাল, শিবপুর ও পালপাড়ায়।

কিন্তু বরাবরই মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজিতে কৃষকরা বাজারে সবজির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ রমজানে বাজারে সকল শ্রেণী মানুষের কাছে বেগুনের চাহিদা থাকায় দাম ভালো পাওয়া যাচ্ছে। এতে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক।

নরসিংদীর বিভিন্ন সবজির বাজার ঘুরে জানা গেছে, আকার ও জাত ভেদে বেগুনের মূল্য নির্ধারণ করে বিক্রি করছেন কৃষক ও পাইকাররা। বাজারগুলোতে লম্বা ও গোল জাতের বেগুন পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে লম্বা বেগুন খুচরা কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি বিক্রেতা কবির হোসনে জানান, তিনি এবার লম্বা বেগুন প্রতি মণ দুই হাজার এবং গোল জাত ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় কিনছেন। কৃষকরা বাজারে বেগুন নিয়ে আসলে সরাসরি গাড়ি থেকে বেগুন কিনছেন তারা।

তিনি জানান, রমজানের আগে লম্বা বেগুনের প্রতি মণ পাইকারি দর ছিলো ৬ শ’ টাকা। রমজান আসায় বাজারে এর দাম বেড়ে হয়েছে ১৫০০ টাকা মণ। এসব বেগুন তিনি ঢাকা-চট্টগ্রামে সাপ্লাই দিচ্ছেন বলে জানান। বেগুনগুলো গন্তব্য স্থানে পাঠাতে পরিবহন-লেবার খরচসহ প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা খরচ হচ্ছে। সব মিলিয়ে বাজারে বেগুনের চাহিদা থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে না বলেও তিনি জানান।

কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, তিনি এবার ১২ শতাংশ জমিতে বেগুনের চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয় আনুমানিক ১৫ হাজার টাকা। বাজারে লম্বা বেগুন ১ হাজার ৬ শ’ থেকে ৮ শ’ এবং গোল বেগুন ১৪০০ টাকায় বিক্রয় করতে পারছেন। রমজানে বেগুনের চাহিদা থাকায় প্রতি মণে ৬ থেকে ৭ শ’ টাকা বেড়েছে। এতে এ বছর তিনি অনেকটা লাভবান হবেন।

রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চলতি বছরে এ উপজেলায় প্রায় ১ শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে বেগুনের চাষ হয়েছে। আবাদকৃত জমি থেকে আনুমানিক প্রায় ৩ হাজার টন ফসল তুলা যাবে। আমরা বেগুন চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সঠিক পরামর্শে কৃষকদের অত্যধিক আগ্রহ ও ভালো মুনাফা পাওয়ায় বেগুন চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করি, এ আগ্রহ ভবিষ্যতেও থাকবে।


আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০